আমি প্রচুর দম্পতিকে আমার চেম্বারে আসতে দেখি যারা অদ্ভূত অদ্ভূত বিষয়ে একজন অন্যজনকে একটানা দোষারোপ করতেই থাকেন –

– “তুমি সবসময় তরকারিতে লবন বেশি দাও!
—–আর তুমি? তুমি তো খালি নাক ডাক!

-সংসারে ও একফোঁটা সময় দেয় না!
—-আর ও? ও বুঝি সারাদিন খুব সময় দেয়? ও তো সারাদিন ফেসবুকেই থাকে!

– আমাকে ও আর আগের মত ভালোবাসেনা
—আর তুমি? তুমি মনে হয় খুব ভালোবাসায় ভাসায় রেখেছ আমাকে?”

সারাদিন খিটমিট, মনোমালিন্য লেগেই আছে!

কথা শুনলেই বোঝা যায় মূল সমস্যাটা আসলে অন্য কোথাও।

গল্পের আরো ভেতরে ঢুকলে বের হয়, তাদের দুজনের ভেতরেই আসলে ভয়ংকর Sexual Frustration আছে। কালে ভদ্রে চরম অনাগ্রহে রিলেশনশিপটা আগায়। দু’জন ই দু’জনের ব্যাপারে বিরক্ত। এখন একে অন্যের ভাল কিছুও আর ভাল লাগেনা।

দ্বিপাক্ষিক দোষারোপের এই খেলায় পুরুষদের একটি কমন অভিযোগ থাকে – “আমার স্ত্রীর দিক থেকে তো ইন্টিমেট রিলেশনের ব্যাপারে আমি কোন আগ্রহই দেখি না! নিজের থেকে তো কখনো আগায়ই না আর আমি যে আগাবো তাতেও বিরক্ত হয়।ও তো বলে, আমি নাকি খালি এটার জন্যেই বিয়ে করছি!”

নারীদের ডিফেন্ড করতে লিখছি ব্যাপারটা সেরকম না। লেখাটির মাধ্যমে এই সমস্যাটার ব্যাপারে একটা সচেতনতা তৈরি করতে চেষ্টা করব।

একজন নারীর শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে ‘আগ্রহ’ – শোনাতে খুব সাধারণ একটি বিষয়ের মত শোনালেও সত্যি বলতে এটি একটি জটিল আলোচনা।

জটিল এজন্যে বলছি, কারন অসংখ্য শারীরিক, মনস্তাত্বিক এবং পারিপার্শ্বিক বিষয় এর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে।

একজন নারী প্রেগন্যান্সি, ল্যাকটেশন পিরিয়ড, মেনোপোজ এই সময়গুলোতে যৌন সম্পর্কের ব্যাপারে কম আগ্রহ বোধ করতে পারেন।

বিভিন্ন রোগের কারনে তার অনাগ্রহজনিত সমস্যা হতে পারে যেমন ডায়েবেটিস, থাইরয়েড এর সমস্যা, দীর্ঘমেয়াদী যেকোন ধরনের ব্যথার সমস্যা, মানসিক বিভিন্ন রোগ ইত্যাদি।

প্রচুর ওষুধ আছে যেগুলো ও একজন নারীর আগ্রহের ব্যাপারে সমস্যা সৃষ্টি করে।

আগ্রহ কম বিষয়টাকে ‘রোগ’ বলার আগে(Hypoactive Desire Disorder) আমাদেরকে এই বিষয়গুলো আগে এক্সক্লুড করতে হবে।

এই কারনগুলো যদি আমরা বাদ দিতে পারি হিস্ট্রি এবং পরীক্ষা-নীরিক্ষার মাধ্যমে, তবে রোগী বা রোগীর স্বামী Desire/আগ্রহ বলতে কি বোঝেন সেটার ব্যাপারে গুরুত্বের সাথে আলোকপাত করতে হবে।

বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত বুঝতে একটি শব্দকে আমি ভীষণ গুরুত্ব দেব পুরো লেখাটিতে সেটি হল ‘Desire’। এটি একটি Medical terminology। Sexology তে এটাকে সংজ্ঞায়িত করা হয় Sexual Urging, Need বা Appetite হিসেবে। সোজা বাংলায় বলা যেতে পারে Desire মানে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা।

শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা স্বতস্ফুর্ত ভাবে তৈরি হতে পারে।যেটাকে আমরা মেডিকেলের ভাষায় বলি ‘spontaneous desire’। পুরুষের বেলায় যেটা বোঝা এবং মেলানো সহজ।

একজন নারী যখন বলেন – “আমার তো ইচ্ছাই করে না!” হাজব্যান্ড যখন বলেন – “আমার ওয়াইফ এর সমস্যাটা কি?”
তখন সবাই আসলে এই spontaneous desire কেই বোঝান।

দু’পক্ষই আসলে বিশ্বাস করেন নারীর ও বুঝি ‘সব সময়’ পুরুষের মত spontaneous বা স্বতস্ফুর্তভাবে আগ্রহটা জন্মে!

অন্তত পারফিউমের বিজ্ঞাপনে উদাম দেহের পুরুষের দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে মেয়ের ছুটে যাওয়া দেখে তো বিষয়ের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলাটাও বেয়াদবি!

এখানেই ঝামেলাটা!
জীবন আসলে বিজ্ঞাপন না। এটা একটা অত্যন্ত প্যাঁচের জায়গা।

একজন পুরুষ এর ব্রেইন ‘ফিজিক্যাল রিলেশনশিপ’ এর ব্যাপারটাকে যেভাবে প্রসেস করে এবং একজন নারীর ব্রেইন সেটাকে যেভাবে প্রসেস করে এই দু’টো প্রসেসিং প্যাটার্ন কি একই?

সেক্সুয়ালিটি নিয়ে বৈজ্ঞানিক রিসার্চগুলো, মডেলগুলো কি বলে?

প্রচুর মডেলের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দু’টো মডেল নিয়ে আজকে আগাবো। (আগেই বলে রাখি, মডেল মানেই কোন বিষয়ে উপসংহারে পৌঁছে যাওয়া নয়। সায়েন্টিফিক ফাইন্ডিংগুলো এক জায়গায় করে প্রস্তাবিত একটা বিষয়।)

১৯৬৬ সালে আবিষ্কৃত জনপ্রিয় মডেলটির নাম Master & Johnson’s Model। এটিকে 4 stage model/ EPOR model ও বলা হয়ে থাকে।

এই মডেল অনুসারে ধারণা করা হয়েছিল, নারী-পুরুষ দুপক্ষেরই Sexual Response চারটা ধাপে আগায়।
১) Excitement
২) Plateau
৩) Orgasm(sexual satisfaction)
৪) Resolution

হিসাব খুব সহজ।
Sexual stimuli আসবে(চোখে দেখে, স্পর্শের মাধ্যমে, কল্পনা করে) যার ফলে শরীর রেসপন্স করবে(Excitement phase)। ফলশ্রুতিতে পুরুষের penile erection হবে, নারীর vaginal lubrication হবে।পরবতীতে Semen ejaculation(পুরুষের ক্ষেত্রে) বা Vaginal contraction (নারীর ক্ষেত্রে) এর মাধ্যমে ফিজিক্যাল স্যাটিসফ্যাকশন আসবে।

এই মডেলটি নিয়ে পরবর্তীতে প্রচুর ঘাঁটাঘাঁটি এবং রিসার্চ চলল। এবং বেশ কিছু ব্যাপার বের করা হল-

১) মডেলটিতে Desire বা যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছে করে কি করেনা সেই প্রশ্নের উত্তর না মিলিয়ে সরাসরি অন্যান্য stage গুলোকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।

২) পুরুষদের ক্ষেত্রে অত্যন্ত মানানসই হলেও, নারীদের ক্ষেত্রে এই Linear Model টি (মানে এক ধাপ থেকে আরেকধাপে ছকে ছকে আগানোর বিষয়টি) সব পরিস্থিতিতে মিলানো যাচ্ছিল না।

যেমন-

– নারী সংগীর সাথে রিলেশনশিপের সময়টাতেই শুধু নয়, স্পর্শ, চোখে দেখা(visual stimuli), কল্পনা করা (sexual fantasy) নানাভাবে একজন পুরুষের শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপারে Spontaneous Desire থেকে অপেক্ষাকৃত সহজে Arousal(excitement phase) এ যেতে পারেন।

একজন পুরুষ যৌন সম্পর্ক স্থাপনে সক্ষম কীনা সেটা যাচাই করতেও এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ হিস্ট্রি। যদি কোন sexual inhibition এর ইস্যু না থাকে তবে এটাই এক্সপেক্টেড যে, একজন পুরুষ এর এসব স্টিমুলেশন এর ফলশ্রুতিতে Penile erection হওয়া শুরু হবে(যৌনাংগ শক্ত হওয়া)।

Nocturnal Emission (স্বপ্নদোষ) কেও আমরা বিষয়টির প্রাকৃতিক প্রমাণ হিসেবে বলতে পারি। (এই স্টিমুলেটেড হওয়ার সাথে ছেলেটি খারাপ না ভাল সেই তর্ক অবৈজ্ঞানিক।)

কিন্তু দেখা যায়, নারীদের ক্ষেত্রে spontaneous desire এর বিষয়টি ঠিক এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়না। বা সেটি থাকলেও এতো দ্রুত তারা Excitement ধাপটিতে (Master & Johnson’s Model এর প্রথম ধাপ) যাননা।

অনেক নারী আমরা পাই যারা sexual fantasy থেকে অনেক সময় spontaneous desire অনুভব করলেও Real Time Partnered sex এর সময় Desire বা Excitement কোন ধাপেই আগাতে পারেন না। এক্ষেত্রে স্বামীর ব্যক্তিত্ব,দু’জনের আবেগিক সম্পর্কের গভীরতা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এমনকি অতীতের কোন স্মৃতি নানা কিছুতে নারীরা পিছিয়ে যেতে পারে।

– নারীর চোখে একজন পুরুষকে দেখে, কল্পনায় ভেবে বা তার মাধ্যমে ফিজিক্যালি স্টিমুলেটেড হলে ঠিক কতটুকু Excitement স্টেজের রেসপন্সগুলো আসবে তার কোন ধরাবাঁধা সূত্র নাই। পুরুষের বেলায় ব্যাপারটা অনেক ক্ষেত্রে পরিমাপযোগ্য( Durability of erection, sufficient hardening ইত্যাদি)। সামান্য স্টিমুলেশন এই অনেক চেঞ্জ থেকে অনেক স্টিমুলেশন এও তেমন চেঞ্জ না বোঝা দু’টো স্পেক্ট্রাম ই নারীর বেলায় সত্যি।

-প্রতিটি সেক্সুয়াল এক্ট এই একজন নারী সব সময় orgasm (sexual satisfaction) অনুভব করবেন এটাও সুনিশ্চিত নয়।

এতোসব ঝামেলা থেকে নারীর জন্যে একটা মডেল বের করা সময়ের দাবি হয়ে গেল।

আর এভাবেই নারীদের মনস্তাত্বিক, শারিরীক, হরমোনাল বিষয়গুলো প্রতিপাদ্য করে পরবর্তীতে আলোচনায় আসে আরেকটি বিখ্যাত মডেল নাম Basson’s Model

যেখানে একটা ইন্টারেস্টিং বিষয়কে হাইলাইট করা হয়। এটি একটি circular model। মানে, মডেলটি এক ধাপ থেকে পরের ধাপ এভাবে আগায় না। বরং যেকোন স্টেজে অন্য যেকোন একটি ফ্যাক্টর সেটাকে প্রভাবান্বিত করতে পারে।

এই মডেল অনুসারে, নিশ্চয় একজন নারী Physical Satisfaction ও পছন্দ করেন কিন্তু অধিকাংশ নারী ফিজিক্যাল রিলেশনশিপের ব্যাপারে সেই প্রণোদনা(যেটাকে আমরা বলি Incentive) থেকেই যে আগ্রহী হন ব্যাপারটা সেরকম না(যেটা নিশ্চিতভাবে পুরুষের মূল প্রণোদনা)।

নারী শারীরিক সম্পর্কে অনেক বেশি Emotional intimacy খোঁজেন। এই মডেল অনুসারে এটাই তার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এর ব্যাপারে মূল উৎসাহের জায়গা।

Basson’s Model অনুসারে একজন নারী হতে পারে Neutral Desire বা Zero Desire নিয়ে শারীরিক সম্পর্কটা শুরু করে। তার মানে, মুখে হয়তো তিনি বলে থাকেন যে তার বিন্দুমাত্র আগ্রহ কাজ করছে না, কিন্তু তারপর ও রিলেশনশিপটা যদি আগায় এবং স্বামীর কাছ থেকে যথেষ্ট সাপোর্ট থাকে তাহলে তার ভেতর ‘Receptive’ desire এর জন্ম নেয়।

তার মানে দাঁড়াচ্ছে সম্পর্কটি শুরুর সাথে সাথেই তিনি Excitement Stage টাতে চলে যান সেরকম নাও হতে পারে। স্বামী যখন আস্তে আস্তে emotional intimacy এর যত্ন টা আগে নেন যেমন-
১) সম্পর্কটাতে যথেষ্ট পরিমাণে Fore Play থাকে(শুরুতেই penetrative sex এ না যেয়ে দু’জন দু’জন কে physically explore করা)

২) স্বামী এবং স্ত্রী দু’জন দু’জনের সাথে ইমোশনালি কানেক্ট (genuine connection!) করেন- ছোট ছোট কমপ্লিমেন্ট দেন হতে পারে তাকে দেখতে কেমন লাগছে,তিনি তাকে কতটা ভালবাসেন এসব, হতে পারে সারা দিন কেমন গেল জানতে চাওয়া ইত্যাদি নানা কিছু।

আস্তে আস্তে নারীর ‘Receptive’ desire তৈরি হয়।

এখানে ‘ফোকাস’ করার ব্যাপারটা ভীষণ জরুরী।

অধিকাংশ নারী এই সময়টাতে শুধুমাত্র সেই মুহূর্তটাতেই ফোকাস করতে পারেন না। এই বাচ্চা কাঁদছে, পাশের রুমে কে যেন হাঁটছে, চুলায় ডাল বসানো, বাচ্চার স্কুলের কাজ বাকি, কালকে রান্না কি হবে ইত্যাদি নানা চিন্তা তাকে কাবু করে ফেলে!

Foreplay না থাকা এবং এই ছোট ছোট বিষয়গুলো দিয়ে প্রতিনিয়ত সেই সময়টাতে অন্যমনস্ক থাকার ফলে যেটা হয় নারীর genital blood circulation বাঁধাগ্রস্ত হয়।

এটা এজন্যে জরুরী যে, এর মাধ্যমেই আসলে যোনিপথ এ পিচ্ছিলতা বাড়ে। Excitement stage এ এটাই হবার কথা। সেটা নিশ্চিত না হলে physical intimacy সব সময় পেইনফুল হয়। physical satisfaction/ orgasm হবার হার ও কমে যায়।

আর এভাবেই স্বামীদের যথেষ্ট অসচেতনতার জন্যে স্ত্রী আস্তে আস্তে ব্যথার ভয়, অতৃপ্তি, জবরদস্তি থেকেও আগ্রহ হারাতে থাকেন।

স্বামীরাই কি দোষী?
নিশ্চয় না।

স্বামীরা Foreplay তে কম থাকতে চান এটা যেমন ভয়ংকর কমন আবার এটাও ঠিক অনেকক্ষেত্রে স্ত্রী যখন Spontaneous desire নাই থেকে বলতে থাকেন – আজকে মাথা ব্যথা,বাচ্চা জেগে যাবে, নাস্তা বানানো হয়নি- আস্তে আস্তে পুরুষদের ব্রেইন ট্রেইন্ড হয় ব্যাপারাটা তাড়াতাড়ি শেষ করার মধ্য দিয়ে।

অনেক দিন যদি ইন্টিমেট রিলেশনশিপে গ্যাপ পড়ে পুরুষের Premature Ejaculation(দ্রুত বীর্যপাত) বা Performance anxiety থেকে Erectile dysfunction( যৌন অক্ষমতা) তৈরি হলেও অবাক হবার কিছু থাকে না।
সে আরেক জটিলতার গল্প!

সব মিলিয়ে দম্পতিটি একটা অদ্ভূত সাইকেল এ আটকা পড়েন। দিন, মাস, বছর গড়ায়।

বৈবাহিক জীবনে Sexual Deprivation/Sexual Frustration ভীষণ ভয়ংকর একটা জিনিস। এর সূত্র ধরে কি কি হয়? দু’জনের মাঝে –
১) মানসিক/আবেগিক দূরুত্ব বাড়ে
২) রাগের বা খিটমিট এর পরিমাণ বাড়ে যার ভুক্তভুগী হন স্বামী/ স্ত্রী, সন্তান, বাসা অথবা অফিসের অধিনস্ত (এবং যে কেউ!!)
৩) Behavioural addiction এর ঝুঁকি বাড়ে।
পরকীয়ার দিকে চলে যাওয়া তো আছেই। অনেক ধরনের আসক্তি আমরা দেখি-
– সোশাল মিডিয়া আসক্তি
-খাবারে আসক্তি
– সেক্স আসক্তি/সেক্স চ্যাটিং
– শপিং এ আসক্তি
– গেমিং এ আসক্তি
– হস্তমৈথুনে অভ্যস্ততা
– পণোগ্রাফি আসক্তি

এটা বোঝাটা খুব জরুরী, যেহেতু বিয়ে একটা ম্যারেজ কন্ট্রাক্ট,আমরা সেটাকে গ্র‍্যান্টেড ভাবি। আমরা রোজকার আলু-পটলের গল্পে ইমোশনাল রিলেশনশিপের যত্ন নিতে ভুলে যাই। সংসারে সন্তান আসলে তো কথাই নাই, সারা রুমে যে শুধু ডায়পার, বেবি পাউডারই ছড়ানো সেটাই না! আমরা বুঝিও না কখন আমাদের বিছানাটাও আলাদা হয়ে যায়।

আমরা প্রিয় মানুষের গায়ের গন্ধ ভুলে যাই। এবং অদ্ভূত একটা রিচুয়ালিস্টিক রুটিনে ইন্টিমেট রিলেশনশিপ টা আটকা পড়ে। বিয়ের প্রথম কয়েক বছরের স্মৃতিগুলো ভাবতে ভাল লাগে। আমরা জানি সেই একই মানুষই পাশে শুয়ে আছে কিন্তু আমরা বুঝি আটপৌরে জীবনে কোথায় যেন একটা সূতায় প্যাঁচ খেয়েছে। অন্যজনকে মুখে বলতেও যেন কোথায় একটা বাঁধে। সূতার বাঁধন কখন কিভাবে কেটেছে কেউ সেই দিন বা তারিখটা মনে করতে পারেনা।

আমরা ভাবি, থাক না! দিনতো কেটেই যাচ্ছে!

নিজেদের যৌনস্বাস্থ্যের যত্ন নিন। ইমোশনাল পালস চেক করুন। প্রয়োজনে প্রফেশনালের সাহায্য নিন। সাইকোথেরাপি, সেক্স থেরাপি, মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন এবং কিছু ক্ষেত্রে প্র‍য়োজনবোধে ওষুধ দিয়ে এই সমস্যা থেকে বের হয়ে আসা খুব ভালভাবেই সম্ভব।

কিছু জিনিস সময় এর হাতে ফেলে রাখাটাই বোকামি কারন তাতে পরিস্থিতি দিন দিন হাতের বাইরে চলে যায়। আমরা হয়তো বুঝেও না বোঝার ভান করি।

ভাল থাকুন।

লিখেছেন:

ডাঃ সুষমা রেজা (MBBS, MD)
Lead Psycho-sexologist &
Head of Sexual Medicine Unit
LifeSpring Limited

ছবি: istock, LifeSpring

লেখাটি কি আপনার উপকারে এসেছে?
হ্যানা