প্রথমেই জেনে নেই নিফাস কাকে বলে?
সন্তান প্রসবের সময় বের হওয়া রক্তকে ইসলামিক পরিভাষায় নিফাস বলে। এটা সন্তান প্রসবের দুই-একদিন আগেও শুরু হতে পারে, সেক্ষেত্রে সাথে প্রসববেদনা বা প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ থাকলে তাকে নিফাস বলে গণ্য করা হবে।
হায়েয বা মাসিক অবস্থার সকল বিধান অর্থ্যাৎ সালাত না পড়া, সিয়াম পালন না করা, স্বামী সহবাস না করা, এসবকিছুই নিফাস অবস্থায় প্রযোজ্য হবে। নিফাসের সর্বোচ্চ সময়কাল ৪০ দিন। এর দলীল পাওয়া যায় উম্মে সালামা(রা.)-র বর্ণনা থেকে। তিনি বলেন, “আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের) যুগে নিফাসী নারী চল্লিশ দিন বিরত থাকত।” (আহমদ, আবু দাউদ ও অন্যান্। আলবানীর মতে হাসান সহীহ)
৪০ দিনের আগে রক্ত বন্ধ হলে নিফাস শেষ বলে গণ্য করতে হবে।
যদি প্রসবের ৪০ দিন পরও রক্ত অব্যাহত থাকে তবে তা ইস্তিহাযা বলে গণ্য হবে, তবে যদি তা হায়েযের সময়ের সাথে মিলে যায় তবে তাকে হায়েয ধরতে হবে।
যদি নিফাস বন্ধ হয়ে ৪০ দিন শেষ হওয়ার আগেই আবার রক্ত বের হওয়া শুরু হয় তবে তাকে নিফাস ধরতে হবে যদি এতে নিফাসের রক্তের বৈশিষ্ট্য ও লক্ষণ থাকে। কিন্তু যদি লক্ষণ থেকে বোঝা যায় তা নিফাস না তবে তার জন্য ইস্তিহাযার বিধান প্রযোজ্য হবে। যদি তা হায়েযের সময়ের সাথে মিলে যায় তবে তাকে হায়েয ধরতে হবে।
যদি গর্ভধারণের ৮০ দিনের মধ্যে গর্ভপাত ঘটে তবে যে রক্ত বের হয় তা নিফাস না বরং তার জন্য ইস্তিহাযার বিধান প্রযোজ্য হবে। কারন হাদিস থেকে জানা যায় যে ভ্রুণ মায়ের গর্ভে ৪০ দিন নুতফাহ, ৪০ দিন আলাক্কাহ, ও ৪০ দিন মুদগাহ অবস্থায় থাকে। এই শেষ মুদগাহ অবস্থায় মানব সৃষ্টির লক্ষন প্রকাশ পায়। তাই ৮১ থেকে ১২০ দিনের ভ্রুণের ক্ষেত্রে যদি মানব সৃষ্টির লক্ষন যেমন মাথা, হাত-পা ইত্যাদি প্রকাশ পায় তবে এর জন্য নিফাসের বিধান প্রযোজ্য হবে, অন্যথায় হবে না। ১২০ দিনের বেশি বয়সের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিফাসের বিধান প্রযোজ্য হবে।
সংগৃহীতঃ বই “ফিকহুত তাহারা পবিত্রতা অর্জনের বিধান” সংকলক মুহাম্মাদ নাসীল শাহরুখ