অনেক বাবা-মাকেই ছেলে বাচ্চার খৎনা করানো নিয়ে চিন্তিত হতে দেখা যায়। অনেকের মনে প্রশ্ন থাকে কয়েক মাসের বাচ্চার খৎনা কিভাবে করানো যায়? আবার অনেকে ভাবেন হাঁটতে শেখার বয়সে বাচ্চা পৌঁছে গেলে তাকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে অপারেশনের ব্যপারটা নিয়ে। বাচ্চাদের কিভাবে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করা হয় অপারেশনের জন্য তা নিয়ে আমাদের এই আর্টিকেলটা পড়তে পারেন।
তবে আজকের লেখায় আমরা জানবো এমন কিছু মায়েদের অভিজ্ঞতার কথা যারা বাচ্চাদের খৎনা করিয়েছেন। তাদের বাচ্চাদের বয়স কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত। আমরা তাদের অভিজ্ঞতা তাদের লেখা থেকেই জানব। আসুন শুরু করা যাক।
ইসরাত জাহান ইনুঃ “আমার ছেলেটা ছোটবেলাতেই প্রস্রাব করার সময় আওয়াজ করত। যেটা নরমাল মনে হয়নি । তাই ওর ছয় মাস বয়সেই খতনা করিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আলহামদুলিল্লাহ এই সমস্যা আর হয়নি। ওই সময় ওকে লোকাল এনেসথেসিয়া দিয়েছিল । তবে সে ব্যাপক কান্নাকাটি করছিল। কারণ ওটিতে ডাক্তারের সাথে ওর নানা ভাই ছিল। আমি আর ওর বাবা বাইরে বসে ছিলাম। তার কান্না শুনে বাহিরে বসে আমিও কাঁদছিলাম। কিন্তু ডাক্তারের ভাষ্য অনুযায়ী, সে তখন ব্যাথা পায়নি, অপরিচিত মানুষজন দেখে চিৎকার দিচ্ছিল, ভয় পাচ্ছিল। কসমেটিক সার্জারি করেছিল ওর। কোন ব্যান্ডেজ ছিল না। এক সপ্তাহের মত সময় লেগেছিল ক্ষত শুকাতে। ওয়ার্ম বাথ আর অয়েন্টমেন্ট দিয়েছিল তাতেই ঠিক হয়ে গেছে । দুদিন ওর অস্বস্তি লেগেছিল মনে হয়, পরে সে স্বাভাবিক আচরণ করেছিল। আমার মনে হয় খুব ছোট বেলাতে খৎনা করিয়ে দিলে ঝামেলা কম হয়। ওরা নড়ে কম। আর ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়, আলহামদুলিল্লাহ। আমার ছেলের খৎনা করেছেন চিটাগাং কসমোপলিটান হাসপাতালের ডাঃ হাসান। খরচ হয়েছিল ২০০০ টাকা।”
উম্ম ইব্রাহিমঃ “প্র্যাগনেন্সির সময় যখন জানতে পারি ইন শা আল্লাহ ছেলে হবে, তখন থেকেই তার বাবা আর আমি ঠিক করে রেখেছিলাম জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব খৎনা করিয়ে দিব। তাড়াতাড়ি খৎনা করাতে চেয়েছিলাম, কারণ এতে বাচ্চাদের কষ্ট কম হয়। ব্যাথা কম হয়। খুব বেশি পাহারা দিয়ে রাখতে হয় না। আর একটু বড় হয়ে গেলে যেমন উলটানো শেখা কিংবা হাত দিয়ে ক্ষত স্থান ধরতে পারবে এমন হয়ে গেলে খুব বেশি পাহারা দিয়ে রাখতে হয়, অনেক সাবধান থাকতে হয়। আরও বড় হয়ে গেলে বাচ্চাকে বুঝিয়ে ওটি বেডে উঠানোই তো মুশকিল! অনেকেই জিজ্ঞেস করেন, ভয় করেনি?! না করেনি। কারণ, একদম ছোট বাচ্চার খৎনা দেখার অভিজ্ঞতা আমাদের ছিল। আমাদের পরিবারেই হওয়ার সাথে সাথে খৎনা হয়েছে এরকম বেশ কিছু বাচ্চা আছে। সিজারের পর মা রুমে আসার আগেই বাচ্চার খৎনা শেষ। আমার নিজের ভাইয়ের ছেলেকেও ১৩ দিন বয়সে করাই, তাই এ সিদ্ধান্ত খুব সহজেই নিতে পেরেছিলাম।
কিন্তু আমরা যা ভেবে রাখি তা কী সবসময় হয়! ডেলিভারির সময় জটিল কিছু প্রবলেম হওয়ায় দীর্ঘদিন হসপিটালে থাকতে হয়। নানান ঝক্কি ঝামেলায় আর করানো হয়ে উঠেনি। অবশেষে আমি যখন ভালভাবে সুস্থ হলাম আলহামদুলিল্লাহ, ছেলের তখন তিন মাস প্রায় শেষ। তার বাবাকে বললাম, আর অপেক্ষা করা যাবে না। খুব দ্রুত ডাক্তার খোঁজ কর, যিনি অবশ্যই একজন সার্জন এবং খৎনার ব্যাপারে অভিজ্ঞ।
যেহেতু আমরা ইউরোপের একটি খ্রিস্টান অধ্যুষিত দেশে বাস করি, তাই মনে সংশয় ছিল যে অভিজ্ঞ ডাক্তার পাব কিনা। কিন্তু দেখলাম, না, খৎনা জিনিসটা খ্রিস্টানদের মধ্যেও প্রচলিত এবং অনেক সার্জনই এটা করে থাকেন। আমরা বেশ কয়েকজন অভিজ্ঞ মুসলিম সার্জনও খুঁজে পাই আলহামদুলিল্লাহ।
বাসার কাছেই অভিজ্ঞ একজন মুসলিম সার্জনের সাথে আমরা এপয়েন্টমেন্ট করি। ছেলের বয়স তখন ৩ মাস। যেহেতু অনেক ছোট, তাই লোকাল এনেস্থিসিয়া দিয়েই করা হয়। আর এজন্য কোনো প্রিপারেশন লাগেনি। সকাল ১১.৪৫ এ এপয়েন্টমেন্ট ছিল। কিছু ফর্মালিটির পর ছেলেকে ব্যাথার ওষুধ সাপোসিটার দেয়া হয়। ওষুধ দেয়ার পর ডাক্তার বললেন, চাইলে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো যাবে, কোন সমস্যা নেই। এর কিছুক্ষণ পরেই ওটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার জিজ্ঞেস করেছিলেন, সাথে কে থাকতে চাই। বললাম, আমরা দুজনেই থাকব। ডাক্তার বারবার বলছিলেন রক্ত দেখে খারাপ লাগতে পারে, খারাপ লাগলেই বের হয়ে যাবেন। আমাদের আলহামদুলিল্লাহ কোনো সমস্যা হয়নি।
ছেলেকে যে ওটি বেডে শোয়ানো হয়, ঠিক তার মাথার উপরেই ছিল টিভি, যাতে কার্টুন চলছিল। ছেলের মনোযোগ সেদিকেই ছিল। আর ডাক্তার ওটিতে ঢুকেই মোবাইলে ছেড়ে দিলেন সূরা কাহাফ। ভীষণ ভাল লেগেছিল পরিবেশটা। সিস্টাররাও প্রায় সবাই ছিলেন হিজাব পরিহিতা।
যাই হোক, লোকাল এনেস্থিসিয়া দিয়েই অপারেশান করা হয়। আলহামদুলিল্লাহ ছেলে অপারেশান চলাকালীন তেমন কোন কান্নাকাটি করেনি। ম্যাক্সিমাম টাইম কার্টুনের দিকেই নজর ছিল। আর কয়েকবার কেঁদে উঠেছিল, তখন আমাদের সাথে নিয়ে যাওয়া ফিডারের দুধ খাইয়ে দিচ্ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ অপারেশান চলাকালীন আর তেমন কান্না করেনি। তবে অপারেশান শেষ হওয়ার পর শুরু করেছে গগনবিদারী চিৎকার! কারণ, ব্যাথার ওষুধ দেয়া হয়েছে, তাতে ওর ঘুম পাচ্ছিল। আমার ছেলের ঘুমানোর সময় কিছু পছন্দের পজিশান আছে। প্রচন্ড ঘুম পাচ্ছিল আবার পছন্দের পজিশান পাচ্ছিল না বলে তখন প্রচন্ড কান্নাকাটি শুরু করে। খৎনার জায়গায় ব্যান্ডেজ করে দেয়া হয়েছিল। আধা ঘন্টা পর চেক করে ডাক্তার ব্যান্ডেজ খুলে দিলেন। এরপর বাসায় চলে এসেছিলাম। বাসায় কিভাবে যত্ন নিতে হবে ডাক্তার তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, খৎনা হওয়ার সাথে সাথেই ডাক্তার নিজেই ডায়াপার পরিয়ে দিলেন।
ওষুধ হিসেবে বাসায় লাগানোর জন্য দুটি অয়েন্টমেন্ট দেয়া হয়েছিল। আর একটা অয়েল দেয়া হয়েছিল, যেটা খৎনার দুইদিন পর থেকে পানিতে কয়েক ফোঁটা দিয়ে, সেই পানিতে ১০ মিনিট ছেলেকে বসিয়ে রাখতে বলেছিলেন। আলহামদুলিল্লাহ এই বাথটা তাড়াতাড়ি শুকাতে সাহায্য করেছে। আর যেদিন খৎনা হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ ভালভাবে ঘুমানোর পর ছেলে নিজেই পা ছুঁড়ে খেলেছে। তেমন উল্লেখ করার মত কান্নাকাটি করেনি। প্রথম ২ দিন ব্যাথার ওষুধ দিয়েছিলাম। সবসময়ের মতই ডায়াপার পড়েছে। কেবল ২ সপ্তাহ ডাক্তারের পরামর্শ মত ঢিলেঢালা প্যান্ট পরিয়েছি।
আর খৎনায় খরচ হয়েছে ৩০০ ইউরো। ডাক্তার ভেদে ৫০০/৬০০ ইউরো পযন্ত লাগতে পারে। তবে যদি মেডিকেল ইন্ডিকেশান থাকে, যেমন প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশান, তাহলে হেলথ ইন্সুরেন্স থেকে পে করা হয়। নিজেদের কোনো টাকা দেয়া লাগে না। আলহামদুলিল্লাহ ভালোভাবেই ছেলের এই সুন্নাহ কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। যারা খৎনা করাতে চান, যেই বয়সেই করান না কেন, ভালভাবে ডাক্তার সম্পর্কে জেনে নিবেন, তিনি একজন জেনারেল সার্জন কিনা আর এ ব্যাপারে অভিজ্ঞ কিনা। ইন শা আল্লাহ ভয়ের কিছু নেই।”
আইরিন আক্তারঃ “আমার ছেলের বয়স যখন ২ বছর ২ মাস তখন ওর খৎনা করাই। ওর ইউরিন ইনফেকশন হতো তাই এতো কম বয়সে করাই। আদ- দিন হসপিটালে প্রফেসর ডঃ এস এম রেজাউল করিম স্যার ওর খৎনা করে। আমাদের সকালে ওকে খালি পেটে নিয়ে যেতে বলেছিল। প্রথমে ওকে এনেস্থিসিয়া ডাঃ ওর রিপোর্ট দেখে, ওজন নেয়। এরপর হাতে ক্যানোলা পরায়। কিন্তু আমার ছেলের সিরিয়াল ছিল সবার শেষে। আমাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে। ও বার বার খাবার খেতে চাচ্ছিল, ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। ২.৩০ এর দিকে ওকে খৎনা করাতে নিয়ে যায়। আমিও সাথে ছিলাম। ঘুম পারানোর পর আমি চলে আসি। প্রায় ১ ঘন্টা ২০ মিনিট পর ওর ঘুম ভাঙে। বাসায় আসার পরই ও খেলাধুলা শুরু করে, কিছুতেই শোয়াতে বা এক জায়গায় বসাতে পারছিলাম না। ও বেশি নড়াচড়া করার কারনে ওর পেনিস অনেক ফুলে গিয়েছিল। প্রথম দুইদিন সারারাত কান্না করেছিল। ফুলে যাওয়া দেখে আবার ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। ডঃ ওষুধ চেঞ্জ করে দেয়। আর বেশি নড়াচড়া করতে নিষেধ করে। ওর শুকাতে বেশি সময় লাগছে। আমাদের খরচ হয়েছিল ৫৫০০ টাকা।
আমার ছেলে আগে থেকেই ডাক্তার ,নার্স দেখলে ভয় পায়। তাই এবারো ও প্রতিটি ধাপেই প্রচুর কান্নাকাটি করছে। আরেকটি বিষয় বাচ্চাকে অবশ্যই খালি পেটে খৎনা করাতে হবে। আমার ছেলেকে হসপিটালে একজন চকোলেট দেয় আর ও সেটা খেয়ে ফেলেছিল আমি জানতামই না, পরে শুনেছি। একই দিনে আমার ভাতিজার খৎনা করানোর কথা ছিল কিন্তু ও খাবার খাওয়াতে আর করা হয়নি।”
ফারযানা আযিযঃ “আমি কক্সবাজার থাকি। আমার যময দুই ছেলে। আমার বাচ্চাদের বয়স যখন ১৬ মাস তখন ওদের প্রস্রাবে সমস্যা হয়। ডাক্তার বলেন খৎনা করাতে। এখানে খ্রিস্টান মেমোরিয়াল হাসপাতাল আছে, ওখানে বাচ্চাদের নিয়ে গেলে ওরা জানালেন যে লেজারের মাধ্যমে খৎনা করালে ০-১৮ মাস বয়সী বাচ্চাদের গ্লু দিয়ে চামড়াটা লাগিয়ে দেয় আর ১৮ মাসের উর্দ্ধে বাচ্চাদের সেলাই দেয়া হয়। আমার প্রথম বাচ্চাকে ১৮ মাসে খৎনা করাই। ওকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে লেজারের মাধ্যমে খৎনা করিয়েছি। লেজারের মাধ্যমে খৎনা করানো মানে হচ্ছে সাধারণ অপারেশনে অবশিষ্ট চামড়াটা কাঁচি দিয়ে কেটে ফেলা হয়, এতে রক্তক্ষরণ হয়। কিন্তু লেজারের মাধ্যমে করালে ওই চামড়াটা পরিয়ে কেটে ফেলা হয়, এতে রক্তক্ষরণ হয় না। আমার ছেলের ক্ষেত্রে ওর চামড়াটা গ্লু দিয়ে রাউন্ড করে লাগিয়ে দিয়েছে। খুব সুন্দর ব্যবস্থা।
এনেস্থেশিয়ার পর ওর ব্যাক করতে সময় লেগেছিল ৩০ মিনিটের মতো। অপারেশন করাতে ১০ মিনিট লাগে। ১ সপ্তাহ ঠিকমতো যত্ন নিতে হয়। জ্ঞান ফেরার পর একটু ব্যথা লেগেছিল ওর, এরপর স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছিল।
আমার আরেক ছেলেকে খৎনা করিয়েছি সম্প্রতি ওর বয়স যখন ৩ বছর। ওকে শুধু পেনিসে এনেস্থেশিয়া দিয়ে লেজারের মাধ্যমে খৎনা করেছে। ওকে ৩/৪টা সেলাই দেয়া হয়।
খরচ পরেছিল প্রতি জনের জন্য ৪০০০ টাকা করে। খৎনা করাতে ভয়ের কিছু নেই, আল্লাহর ওপর ভরসা রাখবেন। তবে কোন সমস্যা না থাকলে বাচ্চার বয়স ৪ বছরের উপরে হলে কারানোর জন্য বলব কারণ ২/২.৫ বছরের বাচ্চারা অনেক দুষ্টামি করে।”
সানজিদা শারমিনঃ “আমার ছেলের বয়স যখন সাড়ে তিন বছর তখন ওর খৎনা করাই। খৎনা করানোর আগের রাতে ১০টার পর ওকে কিছু খাওয়াইনি। ওকে সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে অপারেশন করা হয়েছে সকাল সাড়ে সাতটায়। আলহামদুলিল্লাহ্ কোন সমস্যা হয়নি। ওর ৩০-৪৫ মিনিট পর জ্ঞান ফিরে এসেছিল। উত্তরায় RMC হসপিটালে ডাঃ আসাদুজ্জামান ফারুক ওর অপারেশন করেছিলেন।
জ্ঞান ফেরার পর আমার ছেলে কোন কান্নাকাটি করেনি, উলটো আমার গালে হাত দিয়ে আদর করে দিচ্ছিল! রাত ৮-১০টা পর্যন্ত মনে হয় ওর একটু ব্যথা করছিল, হয়ত জ্বলছিল। তখন কান্না করেছিল। এরপর আর কোন সমস্যা হয়নি আলহামদুলিল্লাহ্। সপ্তম দিন থেকে পুরোপুরি ক্ষত স্থান শুকিয়ে যাওয়া, ওর স্বাভাবিক হাঁটাহাঁটি শুরু হয়েছিল। আমি নিজে ডাক্তার হওয়ায় স্যার ডিসকাউন্টে করে দিয়েছিলেন আলহামদুলিল্লাহ্, মোট খরচ ৭,০০০ টাকা, সাথে ওষুধের খরচ পড়েছিল।”
আমরা এতক্ষণ বেশ কয়েকজন মায়ের থেকে বাচ্চাকে খৎনা করানোর বৈচিত্রময় অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানলাম। আশা করি তাদের অভিজ্ঞতা বাচ্চাকে খৎনা করানোর ব্যপারে আমাদের আরও পরিষ্কার ধারণা দিতে পেরেছে ইনশাল্লাহ। ভালো সার্জন সম্পর্কে খোঁজ করাটা গুরুত্বপূর্ণ। সেই সাথে, অপারেশনের আগে ও পরে ডাক্তারের নির্দেশনা মতো চলাটাও জরুরী। আল্লাহ্ এই প্রয়োজনীয় দায়িত্বটা সকলের জন্য পালন করা সহজ করে দিক।
আলহামদুলিল্লাহ আমিও যখন জানতে পারি আমার দ্বিতীয় ছেলে হবে তখনি সিদ্বান্ত নেই যে প্রথমেই খৎনা করবো। কারণ প্রথম ছেলের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা খেয়াল করি নাই। তাই ২১ দিনের দিন খৎনা করিয়েছি। ৫ মিনিট সময় নিয়েছে ডাক্তার। আমি এবং আমার হাসব্যান্ডকে বলেছিলো ৫/৬ মিনিট পরে এসো। ছোট বলে কোনো রকমের এনেস্থেশিয়া করে নাই। কেটে শুধু ব্যাণ্ডেজ আর আয়োডিন জাতীয় কিছু দিয়ে দিয়েছিলো। বুঝেছি ওই ৫/৬ মিনিটে অনেক কেঁদেছিলো। আমি যখন নিয়েছি তখন হেঁচকি তুলছিলো। আমরা সবসময় ডায়াপার ব্যবহার করেছি। ডায়াপার চেঞ্জ করলে শুধুমাত্র পেট্রোলিয়াম জেলি দিয়ে দিতাম। অন্য কোনো মেডিসিন ব্যবহার করতে হয় নাই। আলহামদুলিল্লাহ ৭ দিনে ভালো হয়ে গিয়েছে।
মাশা আল্লাহ। ভাল করেছেন। আমার দুই ছেলের ক্ষেত্রে আমরা ৬ ও ৮ মাসের সময় করিয়েছি। দুই ক্ষেত্রেই ৭ দিনের মতো লেগেছে শুকাতে। কোন সমস্যা না থাকলে যত তাড়াতাড়ি করা যায়, ততই ভাল