প্রতিদিনের সহজ আমল:
যাদের কাছে আমলগুলো কঠিন লাগবে, এটা এই কারনে লাগবে যে আমরা এই আমলগুলো করতে অভ্যস্ত না। দেখেন, অনেক প্রেমিক প্রেমিকারা সারা রাত জেগে একে অন্যের সাথে কথা বলে। সারা রাত জেগে নামাজ বা কুরআন আমরা কতজন পড়ি? হযরত উসমান রদ্বি. প্রতি রাতের নামাজে একবার কোরআন খতম করতেন। অনেক স্টুডেন্টই পরীক্ষার পরে সারা রাত জেগে সিনেমা দেখে, চ্যাটিং করে, কিন্তু আমরা কতজন সারা রাত জেগে আমল করি? আমরা যখন জাহেল ছিলাম সারা রাত জেগে এমন কাজ করতাম যার আখিরাতে কোন মূল্যই নাই। আর দ্বীনের বুঝ পাওয়ার পরে ওগুলো না করে ঘুমাই। একটু উন্নতি হয়েছে।
আমি বলছি না সবাই এক দিনেই এই আমলের ওপর উঠে যাবেন। অল্প অল্প করে শুরু করুন। আমরা জ্বীন ও যাদুর যে পরিমান দৌড়াত্ব দেখতে পাচ্ছি, তাতে দাজ্জাল আসতে আসতে অবস্থা আরও খারাপ হবে। যে আল্লহর দিকে হেটে আগায় আল্লহ তার দিকে দৌড়ে আসেন। অর্থাৎ আমাদেরই আগে আগাতে হবে। আল্লহতায়ালা তাওফিক দান করেন।
ফজর: ২ রাকাত সুন্নত,
সুন্নাত পড়ে ১০০ বার সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহী সুবহানাল্লহিল আযীম, ওয়াবিহামদিহী, আসতাগফিরুল্লহ।
২ রাকাত ফরজ
আল্লহু আকবার ১ বার
আস্তাগফিরুল্লহ ৩ বার
আল্লহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরম- ১ বার
শরীর বন্ধ করা (৪ কুল পড়ে ৩ বার করে দুই হাত মুনাজাতের মত নিয়ে ফু দেয়া তারপর সেই হাত সমস্ত শরীরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ৩ বার বুলানো)
৩৩ আয়াতঃ কোরয়ানের ৩৩ টি আয়াত এটাকে অনেকে মনযিল বলেন। আয়াতগুলো রুকইয়াহর আয়াত। খুবই উপকারী।
আল্লহুম্মা আজিরনী মিনান নার ৭ বার
আউযুবিল্লাহিস সামিয়িল আলীমি মিনাশ শাইত্বনির রযীম- ৩ বার
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত
বিসমিল্লা হিল্লাজি লা ইয়াদ্বূররু মা আসমিহী শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়াহু আস সামিউল আলীম- ৩ বার
আউযুবি কালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মাতি মিন শাররিমা খলাক্ব- ৩ বার
আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রযীম- ১০ বার
সুরা ইয়াসীন
সুরা আর রহমান
৩ তসবীহ আদায়
৩ তাসবীহ কি?
(সুবহানাল্লহি ওয়ালহামদুলিল্লাহু ওয়া লা ইলাহা ইল্লাল্লহু ওয়াল্লহ আকবার ১০০ বার
আসতাগফিরুল্লাহ ১০০ বার,
দুরুদ শরীফ ১০০ বার)
২০০ বার কালিমা
ফজরের পর ব্যস্ততা থাকলে ৩ তাসবীহ ও কালেমার আমল তাহাজ্জুদের পরে করতে পারেন।
ইশরাকের নামাজ- সূর্যদয়ের পর ২+২ রাকাত নামাজ (উপরের আমলের মাঝে পড়ে নিবেন ইন শা আল্লহ)
সুবহানাল্লহি ওয়াবিহামদিহী, আদাদা খলকিহী, ওয়া রিদ-অ নাফসিহী, ওয়া যিনাতা আরশিহী, ওয়া মিদা দা কালিমাতিহ।- ৩ বার
চাশতের নামাজ- সকাল ৯-১০ টার মাঝে আনুমানিক ২-১২ রাকাত ইচ্ছা।
৪ রাকাত জাওয়াল এর নফল (যোহর এর ওয়াক্ত হওয়ার সাথে সাথে, যোহর: ৪ রাকাত সুন্নত, ৪ রাকাত ফরজ, ২ রাকাত সুন্নত
আল্লহু আকবার ১ বার
আস্তাগফিরুল্লহ ৩ বার
আল্লহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরম- ১ বার
শরীর বন্ধ করা (৪ কুল পড়ে ৩ বার করে দুই হাত মুনাজাতের মত নিয়ে ফু দেয়া তারপর সেই হাত সমস্ত শরীরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ৩ বার বুলানো)
৩৩ আয়াতঃ কোরয়ানের ৩৩ টি আয়াত এটাকে অনেকে মনযিল বলেন। আয়াতগুলো রুকইয়াহর আয়াত। খুবই উপকারী।
সুরা ফাতাহ
২০০ বার কালিমা
আসরের ৪ রাকাত সুন্নত, আসর: ৪ রাকাত ফরজ
৩৩ আয়াতঃ কোরয়ানের ৩৩ টি আয়াত এটাকে অনেকে মনযিল বলেন। আয়াতগুলো রুকইয়াহর আয়াত। খুবই উপকারী।
সুরা নাবা
২০০ বার কালিমা
৩ তসবীহ ১০০ বার করে প্রতিটা
মাগরীব: ৩ রাকাত ফরজ,
আল্লহু আকবার ১ বার
আস্তাগফিরুল্লহ ৩ বার
২ রাকাত সুন্নত
আওয়াবিনের নামাজ ৬ রাকাত নফল
৩৩ আয়াতঃ কোরয়ানের ৩৩ টি আয়াত এটাকে অনেকে মনযিল বলেন। আয়াতগুলো রুকইয়াহর আয়াত। খুবই উপকারী।
আল্লহুম্মা আজিরনী মিনান নার ৭ বার
আউযুবিল্লাহিস সামিয়িল আলীমি মিনাশ শাইত্বনির রযীম- ৩ বার
সূরা হাশরের শেষ তিন আয়াত
বিসমিল্লা হিল্লাজি লা ইয়াদ্বূররু মা আসমিহী শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামায়ি ওয়াহু আস সামিউল আলীম- ৩ বার
আউযুবি কালিমাতিল্লাহিত তা-ম্মাতি মিন শাররিমা খলাক্ব- ৩ বার
আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইত্বনির রযীম- ১০ বার
আল্লহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরম- ১ বার
শরীর বন্ধ করা (৪ কুল পড়ে ৩ বার করে দুই হাত মুনাজাতের মত নিয়ে ফু দেয়া তারপর সেই হাত সমস্ত শরীরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ৩ বার বুলানো। এরপর দুই হাত শুরু থেকে শেষে মাসেহ)
সুরা ওয়াকিয়া
সুরা কাহাফের ১ম ১০ আয়াত
শরীর বন্ধ
তালিম ৩০ মিনিট
এশার আগে ৪ রাকাত সুন্নাত, এশা: ৪ রাকাত ফরজ, ২ রাকাত সুন্নত, ৩ রাকাত বিতর
আল্লহু আকবার ১ বার
আস্তাগফিরুল্লহ ৩ বার
আল্লহুম্মা আনতাস সালাম ওয়া মিনকাস সালাম তাবারকতা ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরম- ১ বার
শরীর বন্ধ করা (৪ কুল পড়ে ৩ বার করে দুই হাত মুনাজাতের মত নিয়ে ফু দেয়া তারপর সেই হাত সমস্ত শরীরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত ৩ বার বুলানো)
৩৩ আয়াতঃ কোরয়ানের ৩৩ টি আয়াত এটাকে অনেকে মনযিল বলেন। আয়াতগুলো রুকইয়াহর আয়াত। খুবই উপকারী।
সুরা মুলক
রুকইয়াহ আমল
ঘুম ৯ টা থেকে ভোর তিনটা
ঘুমানোর আগের আমলঃ
১. ওযু না থাকলে করে নেয়া
২. বিসমিল্লাহ বলে বিছানা ঝেড়ে নেবেন
৩. তিন কূল পড়ে শরীর মাসেহ করবেন
৪. সুবহানাল্লহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার, আল্লহু আকবার ৩৪ বার
৫. আয়াতুল কুরসী ১ বার
৬. কালেমা ১ বার
৭. ঘুমানোর দোয়া পড়ে ডান কাত হয়ে ঘুমিয়ে যাবেন।
ভোর ৩ টায় ঘুম থেকে উঠে যাবেন, উঠেই দোয়া পড়বেন
আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি আহইয়ানা বা’দা মা আমাতানা ওয়া ইলাইহিন নুশুর।
এরপর ওজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নেবেন।
যাদুর গিট খোলার আমলঃ
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার গ্রীবাদেশে তিনটি গিট দেয়। প্রতি গিটে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত। তারপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে একটি গিঠ খুলে যায়, পরে উযূ করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়, তারপর নামাজ আদায় করলে আর একটি গিঠ খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয়, প্রফুল্ল মনে ও নির্মল চিত্তে। অন্যথায় সে সকালে উঠে কলুষিত মনে ও অলসতা নিয়ে।
সহীহ বুখারিঃ ১০৭৬
এটাই তাহাজ্জুদ (রাতের শেষভাগে)। উঠতে পারবো না মনে হলে এশার সময় শেষে ২ রাকাত পড়ে নিতে পারেন তাহাজ্জুদের বেস্ট সময় রাত ২ টা থেকে ফজরের আগে পর্যন্ত। তাহাজ্জুদ পড়ে ইশরাক পর্যন্ত না ঘুমানো শরীর ও মনের জন্য ভাল। আমরা আমাদের পেশেন্টদের রাত ৯ টা থেকে ভোর ৩ টা পর্যন্ত ঘুমাতে বলি।
দুয়া- তাহাজ্জুদের পরে অন্ততঃপক্ষে ৩০ মিনিট দোয়া করা চাই। এইসময় যা দোয়া করবেন সব কবুল হবে ইন শা আল্লহ। শুধু নিজের জন্য দোয়া না করে সমস্ত উম্মতকেও দোয়ায় শামিল করা চাই।
সাপ্তাহিক আমলঃ
প্রতি শুক্রবার সূরা কাহাফ তিলাওয়াত করা। যাদের একবারে তিলাওয়াত করতে কষ্ট হয় তারা শুক্রবারের শুরুতে অর্থাৎ আগের দিন মাগরিব থেকে শুরু করে শুক্রবার আসর পর্যন্ত প্রতি ওয়াক্তে ২২ আয়াত করে পড়তে পারেন।
২. প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার রোজা রাখা
৩. আপনার হালকায় বা মসজিদ থেকে মাস্তুরাতের সাপ্তাহিক ইজতেমায়ী তালিমের পয়েন্টে যাওয়া।
মাসিক আমল:
১. আইয়ামে বীজ এর রোজা রাখা- চাঁদের ১৩, ১৪ ও ১৫ তম দিন
২. বাবা, ভাই, স্বামী এবং ৯ বছরের বড় ছেলেদেরকে পুরুষদের তিন দিনের জামাতে পাঠানো। আমরা কখনো একা একা ভাল হতে পারবো না, জান্নাতেও যেতে পারবো না যদি না আমার আহাল বা পরিবারভুক্তরাও দ্বীনদ্বার না হয়। তিন দিনের জামাত থেকে ঘুরে আসলেই দেখতে পাবেন তাদের আমল ও আখলাকে কেমন পরিবর্তন এসেছে।
এই আমলগুলো মূলত প্রোটেকশানের সুরক্ষারজন্য; রুকইয়াহ চিকিৎসাতেও কাজে লাগে। তবে রুকইয়াহ চিকিৎসার জন্য নীচের বিষয়গুলোও জরুরীঃ
১. সরাসরি রুকইয়াহ
২. যাদুর গিট খুঁজে খুঁজে ধ্বংস করা (আঙ্গুল দিয়ে টিপে টিপে অথবা হিজামার মাধ্যমে)
৩. হিজামা প্ল্যানেটের বিশেষ ডায়েট ও লাইফস্টাইল মেইনটেইন করা।
৪. এনেমা ও নেতিপটের সাহায্যে জ্বীন ও যাদুর আবাসস্থল ধ্বংস করা।
৫. রুকইয়াহর গোসল করা
৬. রুকইয়াহর পানি ব্যবহার করা
৭. রুকইয়াহর তেল ব্যবহার করা
৮. শরীয়ত সম্মত ভাবে ঘর বন্ধ করা।
৯. রুকইয়াহর পানি ছিটানো।
১০. রুকইয়াহর অডিও শোনা বা তিলাওয়াত করা।
বিশেষ গূরুত্বপূর্ণ কথাঃ ইসলামী শারীয়াহ তে নতুন দিন শুরু হয় সূর্যাস্ত থেকে। তাই যার নতুন দিনের শুরু ভাল হবে তার পুরা দিনের আমল ঠিক হবে। তাই ঘুম ঠিক ভাবে হওয়া জরুরী। চেষ্টা করতে হবে রাত ৯ টায় ঘুমাতে তাহলে খুব চেষ্টা করেও তাহাজ্জুদ আর ফজর মিস করতে পারবেন না ইন শা আল্লহ। একটা জিনিস খেয়াল করবেন মাগরিব আর ফজরে আমাদের আমল বেশি। এগুলোই মূল প্রোটেকশানের আমল। আর ফজর পড়ার জন্য সঠিক সময়ে ঘুমানো জরুরী।