শিশুদের রুচি নষ্ট হওয়া এবং দুর্বলতার জন্য কৃমি দায়ী হতে পারে।শিশুদের পুষ্টিহীনতারও অন্যতম কারণ এটি।কৃমির সংক্রমণ হলে আপনি সন্তানকে যা খাওয়ান না কেন, তার একটা বড় অংশ কৃমির পেটে চলে যায়।
তবে পেটে ব্যথা,পেট কামড়ানো,দাঁত কিড়মিড় করা,লালা পড়া ইত্যাদি যে সব সময় কৃমি সংক্রমণের লক্ষণ,তা কিন্তু নয়। লক্ষণগুলো জানা থাকলে সন্তানের জন্য মঙ্গল।
কৃমির লক্ষণ
বিভিন্ন জাতের কৃমি শিশুদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। তবে মোটামুটিভাবে শিশুদের কৃমির লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে –
- শিশুর অরুচি বা খাওয়া-দাওয়া কমিয়ে দেওয়া,
- আয়রনের ঘাটতি ও রক্তশূন্যতার জন্য দুর্বলতা,
- বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া,
- অপুষ্টিতে ভোগা,
- পেট ফাঁপা ও ডায়রিয়া
- কখনো কখনো কৃমির কারণে অ্যালার্জি, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট, কফ-কাশিও হতে পারে।
চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্তি
- দুই বছরের পর থেকে সবার জন্য কৃমির ওষুধের মাত্রা একই। অর্থাৎ আপনি যে পরিমাণ ওষুধ খাবেন, আপনার আড়াই বছরের শিশুও তা খাবে। তাই এ নিয়ে বিভ্রান্ত হবেন না।
- কৃমির ওষুধের জন্য শীত বা গ্রীষ্ম কোনো ব্যাপার নয়। যেকোনো সময়ই খাওয়ানো যায়, এতে শিশুর কোনো ক্ষতি হয় না।
- বাড়ির সবার একসঙ্গে কৃমির ওষুধ খাওয়া উচিত। এতে কৃমি থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়।
- সুস্থ মানুষ বা শিশুরাও যদি চার-পাঁচ মাস পর পর কৃমির ওষুধ খান, তবে কোনো ক্ষতি হয় না।
আজকাল দুই বছরের কম বয়সের শিশুদেরও কৃমির ওষুধ খাওয়ানো যায়,তবে তার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কৃমি প্রতিরোধ
প্রতিরোধ করতে সচেতনতার বিকল্প নেই।
১. খাওয়ার আগে ও টয়লেট থেকে আসার পর সাবান (তরল সাবান হলে ভালো) দিয়ে হাত ধুতে হবে। শিশুদের মধ্যে ছোটবেলা থেকে এ অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।
২. শিশুদের হাত ও পায়ের নখ ছোট রাখতে হবে।
৩. রান্নার আগে শাকসবজি ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী ভালোভাবে ধুতে হবে। এ সময় অবশ্যই হাত ধুতে হবে।
৪. মাংস, বিশেষ করে গরুর মাংস পুরোপুরি সেদ্ধ করে খেতে হবে।
৫. টয়লেটে যাওয়ার সময় অবশ্যই শিশুদের স্যান্ডেল পরার অভ্যাস করতে হবে।
ডা.মেহেদি হাসান
এমবিবিএস,এমএস(শিশু সার্জারী)
শিশু ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ সার্জন।
প্রাক্তন অনারারি মেডিকেল অফিসার,ঢাকা শিশু হাসপাতাল।
বেশ ভাল লিখেছেন। ডাক্তার যে ভাবে পরামর্শ দিয়েছেন সেই পয়েন্টগুলি এখানে আলোকপাত করা হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ।