মাশাআল্লাহ, আপনার চটপটে বাচ্চার ফুটফুটে ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করছেন। তার সাথে কাটানো মধুর মধুর সময়ের গল্প লিখছেন।
একজন বাবা-মায়ের জন্য এরচেয়ে সুন্দর অনুভূতি আর হয় না! যেন সময়কে ইচ্ছা করে আটকে দিতে। জীবনের পাওয়া শ্রেষ্ঠ এক অনূভুতি।
এদিকে একজন বছরের পর বছর ধরে ডাক্তারের কাছে দৌড়াচ্ছে শুধুমাত্র একটা বাচ্চার জন্য।
সেই মেয়েটার জীবনে আর কিচ্ছু চাওয়া নেই।
কেবল একটা সন্তান।
ফেইসবুক স্ক্রল করতে গিয়ে সেই মেয়েটা আপনার ফুটফুটে বাচ্চার দুরন্তপনা আর তার গল্প পড়ছে।
তার ভেতরকার না হওয়া মাতৃত্বটা তীব্র হাহাকারে আর্তনাদ করে উঠছে।
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী এখানে পর্দার খেলাফ হচ্ছে।
কেননা পর্দার খেলাফ শুধু পোশাকেই হয় না।
যার যা নেই তার সামনে সেই গল্প বলাটাও পর্দার খেলাফ।
যেমন কোন এতিমের সামনে নিজের সন্তানকে আদর করে ডাকতে মানা।
যদিও আপনি সরলমনে আপনার বাচ্চার ছবি দিচ্ছেন।
কিন্তু আরেকজনের শুন্য বুকে সেটা আঘাত লাগছে। না হতে পারা মায়ের মাতৃত্বের আর্তনাদ।
আপনি কাউকে আঘাত করতে চাননি। কিন্তু আপনার অজান্তে আরেকজন আঘাতটা পেয়ে গেছে।
আবার অনেকেই আপনার ফুটফুটে বাচ্চার ছবি দেখেছে। দেখার সময় ভুলে গেছে ছোট্ট একটা শব্দ "মাশাআল্লাহ" উচ্চারণ করার কথা।
আবার কারও অন্যের ভালো দেখে মনটা কেমন কেমন করে উঠল। মানুষ তো ফেরেশতা না।
কিছুদিন পর আপনি লক্ষ্য করলেন আপনার সুস্থ সবল বাচ্চাটা কোন কারণ ছাড়াই অসুস্থ।
অসুস্থতা যেন পিছুই ছাড়ছে না।
আপনি নিজেকে সেকেলে ধ্যান ধারণার মানুষ বলে মনে করেন না। আপনি মুক্তমনা।
তাই "বদনজর" শব্দের প্রতি আপনার বিশ্বাস নেই।
যেহেতু আপনি বদনজরে বিশ্বাস করেন না তাই এগুলোকে পারলে হেসেই উড়িয়ে দেন।
কিন্তু হাদিসে আছে, বদনজর সত্য।
তকদিরে মৃত্যুর পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয় "বদনজরে"।
"বদনজর" উটকে নিয়ে যায় পাতিলে। আর মানুষকে নিয়ে যায় কবরে।
এগুলো কোন বানানো কথা নয়। হাদিস দিয়ে প্রমাণিত।
তাই "বদনজর" শব্দকে এড়িয়ে যাবেন না। সোসাইল মিডিয়ায় আপনার সন্তানের ছবি শেয়ার করার আগে সতর্ক হোন।
আপনার শেয়ার করা একটা ছবি অনেক সময় আপনার সন্তানের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
একজন পিতা-মাতার কাছে সন্তানের অসুস্থতার মতো ভারি বোঝা আর কিছুই হয় না।
সন্তানকে সুস্থ রাখতে সকাল সন্ধ্যার আমলের পাশাপাশি নিজেও তার দিকে তাকিয়ে "মাশাআল্লাহ" বলতে ভুলবেন না যেন।