একটা এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফেড বাচ্চা মায়ের শরীরের সাথে সারাদিনই জোকের মতো লেগে থাকে। মাঝে মাঝে মনে হয় রক্তচোষা জোকের মতো মায়ের শরীরটাই যেন বেচে থাকার উপজীব্য!
সেই মায়ের মাথায় অনেক অনেক কাজের তাড়া থাকলেও তার পক্ষে খুব বেশি কিছুই করা সম্ভব হয়না।
একটা বাচ্চা হওয়ার পরে তাই ব্রেস্টফিডিং মায়ের টানা দুই বছর কিছু না কিছু সাপোর্ট দরকার। একদিন এক আপু বাসায় আসলেন,ওনার আম্মাকে নিয়ে।বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে মায়ের কাছে পানি চাইলেন। মা পানি এগিয়ে দিলো। দেখে চোখে পানি চলে এসেছিলো। বাবু খাওয়ার জন্য মাঝেমধ্যে এমনই কান্না করে যে পানিটা ঢেলে আনার মতো অবস্থা থাকেনা।বাধ্য হয়ে পানি না খেয়েই খাওয়াতে হয়। বাসায় একা থাকায় কাউকে বলাও যায়না!
একটা ব্রেস্টফিডিং মা ক্রন্দনরত বাচ্চাকে রেখে কিছুই করতে পারেনা।
কানাডার এক গবেষণায় দেখা গেছে ওয়েস্টে আশংকাজনকহারে ব্রেস্টফিডিং কমছে। অথচ হিউমান মিল্ক লাগলে মিল্ক ব্যাংক থেকে নিয়ে হলেও খাওয়াতে বলছেন গবেষকরা। মানবশিশুর জন্য হিউম্যান মিল্ক খুবই জরুরি, ইমিউনিটির জন্য হলেও দরকার।
সম্পাদকের নোটঃ মিল্কব্যাংক থেকে দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে দুধ মায়ের যে সম্পর্ক তৈরী হয় সেটা নিয়ে ইসলামের বিস্তৃত বক্তব্য ও বিধান আছে। মুসলিমদের এধরনের সুবিধা নেয়ার আগে দেখা উচিত এধরনের মিল্কব্যাংক ইসলামের নীতি মেনে চলে কি না এবং আল্লাহভীরু লোকেরা এটা পরিচালনায় যুক্ত কি না।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “রক্ত সম্পর্কের কারণে যারা মাহরাম, দুধ পানের কারণেও তারা মাহরাম (বিয়ের জন্য নিষিদ্ধ)।” (বুখারি ২৬৪৫, মুসলিম ১৪৪৭)
মিল্কব্যাংক হোক বা দুধ-মা, উভয়ক্ষেত্রে একজন মুসলিমকে এসংক্রান্ত ইসলামের বিধানগুলো জানা ও মানার ব্যাপারে চুড়ান্ত সক্রিয়তা দেখানো আবশ্যক।
ব্রেস্টফিডিং একটা চয়েজ। কোনো মা চাইলে নাও খাওয়াতে পারে তার বাচ্চাকে। প্রাচীন আরবে তো সম্ভ্রান্ত মহিলারা খাওয়াতোই না, ধাত্রী খাওয়াতো। কারন এটা একটা কাজ, এই কাজে কমিটমেন্ট লাগে।
এই উপমহাদেশের বেশিরভাগ মানুষেরই হয়তো জীবনের প্রথম খাবার মায়ের দুধ। মায়ের দুধ মানেই মায়ের শরীরকে উপজীব্য করে তৈরি হওয়া শিশুর খাবার। এটার জন্য মা’কে এতোটাই নিবেদিত হতে হয় যে মা’কে ভালো খেতে হয়, ভালো ঘুমাতে হয়, চব্বিশ ঘন্টার যে কোনো সময় চাহিবামাত্র প্রদান করতে বাধ্য থাকতে হয়।
সেই ব্রেস্টফিডিং নিয়েও নাকি আমাদের ট্যাবু স্টেরিওটাইপ কাজ করে। সেই মাকে ও আমরা জিজ্ঞেস করতে পারি তিনি সারাদিন কী করেন? যদি কাজের লোকই সব কাজ করে দিয়ে যায়!
অদ্ভুত হাস্যকর এই সমাজ সভ্যতা!