একজন নারী যখন নিশ্চিত হবেন যে, তিনি মা হতে চলেছেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করবেন। কারণ এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে একটা পুরষ্কার। অনেকেই আল্লাহর কাছে বারে বারে দুআ করেন সুসন্তানের জন্য, এবং আল্লাহ তাদের এই দুআ’র জবাব হয়তো ভিন্ন ভাবে দেন। তাই আপনি যখন মা হবার ব্যাপারে নিশ্চিত হবেন, তখন অবশ্যই শুকরিয়া আদায় করুন, কারণ আল্লাহ আপনার কাংখিত পথেই আপনার প্রার্থনার জবাব দিয়েছেন। সন্তানের জন্য আল্লাহ’র প্রিয় নবী ইব্রাহিম (আঃ) তার কাছে খুব মর্মস্পর্শী দুআ করতেন। এবং বারবার দুআ করতে থাকতেন।
তাই একজন মুসলিম নারীর অবশ্যই আল্লাহ’র কাছে কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত এবং নিচের দুআ গুলো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সুন্দর মাধ্যম:
১. এই দুআটি বারবার পড়ুন:
আল্লাহুম্মা লা’কাল হামদু ওয়ালাকাশ শুকরু
অনুবাদ: হে আল্লাহ, সকল প্রশংসা শুধুই তোমার জন্য এবং আমার সব কৃতজ্ঞতা শুধুই তোমার প্রতি।
২. প্রতিদিন একই সময়ে ২ রাকাত নফল নামায পড়ুন। সিজদাকালীন বেশি করে দুআ করুন। এই দুআটি পড়ুন:
রাব্বি হাবলি মিন লাদুনকা যুররিয়াতান তায়্যিবান ইন্নাকা সামিউদ দু’আ।
অনুবাদ: হে আমার প্রভু, আমাকে তোমার পক্ষ থেকে একটি পবিত্র সন্তান দান করুন। নিশ্চয় আপনি দুআ শ্রবণকারী। (কুরআন সুরা আল-ইমরান ৩:৩৮)
৩. এই দুআটি নিয়মিত পড়ুন:
রাব্বি-জ-আলনি মুকিমা সালাতি ওয়া মিন যুররিয়াতি রাব্বানা ওয়া তাকাব্বাল দুআ
অনুবাদ: হে প্রভু, আমাকে ও আমার উত্তরাধীকারকে নামায প্রতিষ্ঠাকারি বানাও এবং আমাদের দুআ কবুল কর। (কুরআন সুরা ইব্রাহীম ১৪:৪০)
৪. এভাবে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। মানুষ যখন আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ হয়, তখন তার মন আনন্দে ভরে যায়। তাই সবসময় আল্লাহ’র কাছে দুআ করা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে মনকে প্রফুল্ল রাখুন। অতীতের সব দুঃখ বেদনার কথা মনে ঠাই দিবেন না, বরং নিজের আত্মা সমুন্নত রাখুন। জান্নাতের পুরষ্কারের কথা মনে করুন।
এসময় শ্বাশুড়ি ও ননদের সাথে দৈনন্দিন জীবনের বিতর্কিত বিষয়গুলো এসময় সচেতনভাবে এড়িয়ে চলুন, এবং আপনার স্বামীর সাথে অনাকাংখিত বিতর্ক এড়িয়ে চলতে প্রয়োজনে কঠোর নিরবতা অবলম্বন করুন। আপনার সন্তানের আগমনের এমন সুমুহুর্তে সবার সাথে স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করুন। কাউকে কষ্ট দিয়েছেন মনে করলে সাথে সাথে ক্ষমা চেয়ে নিন এবং নেতিবাচক বিষয়গুলো ভুলে থাকার চেষ্টা করুন। আপনি যদি কাউকে ত্যক্ত করার চেষ্টা করেন, তবে তার মন্দ প্রভাব আপনার অনাগত সন্তানের উপর পড়ার সম্ভাবনা বেশি। গর্ভাবস্থায় আপনার চিন্তা, ধারণা সবকিছুরই আপনার অনাগত সন্তানকে কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত করে।
তাই একজন মুসলিম নারীর এসময় কৃতজ্ঞ চিত্তে সময় কাটানো উচিত। এই মানসিকতা আল্লাহ’র প্রতি ভালবাসায় রুপান্তরিত হয়। একজন কৃতজ্ঞ মুসলিম নারী এসময় দেখেন আল্লাহ তার উপর অসীম রহমত করেছেন এবং তিনি এই রহমত পরিপূর্ণ ভাবে পেতে চান একটি সুস্থ সন্তানের মাধ্যমে এবং দুআ করেন যেন সে একজন ভাল মুসলিম হয়ে উঠে। তিনি টিভি দেখা, পরচর্চা বা পর্দাহীনতা থেকে দূরে থাকেন, কারণ এগুলো কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পথে অন্তরায়।