পুরুষ এবং মহিলাদের মাঝে বন্ধাত্বের ঝুঁকি দিনে দিনে বাড়ার অন্যতম কারণ গুলোর মধ্যে প্রধান কারণ পরিবার পরিকল্পনা অনেকটা দেরিতে শুরু করা। নানা কারণে বর্তমানে মানুষ দেরিতে বিয়ে করছে, শিশুকে দুনিয়ায় আনার পরিকল্পনা করছে ৩০-৪০ বছর সময়কালে। 

বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত হবার সম্ভাব্য কারণ

WHO এর মতে বিশ্বব্যাপী ৬ জনের মধ্যে ১ জন বন্ধ্যাত্বে আক্রান্ত। বেশ অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে এর পেছনে। অনিয়মিত পিরিয়ড অথবা একেবারেই না হওয়া, অটো ইমিউন ডিজিজ, স্থুলতা, ক্রনিক স্ট্রেসসহ আরও অনেক কিছু। মানুষ অপেক্ষা করছে নির্দিষ্ট গোল এচিভ হলে তারপর পরিবার শুরু করবে বা ২ জনের বেশি সন্তান নিবেনা। কিন্তু ধীরে ধীরে মানুষের ফার্টিলিটি কমে আসছে এবং অনেকের কাছেই শোনা যাচ্ছে এমনকি দুই বাচ্চা নিতেও তাদের অনেক স্ট্রাগল করতে হচ্ছে।

বন্ধ্যাত্ব কি লুকিয়ে রাখব?

তবে এটা এমন একটা টপিক যেই বিষয়ে কথা মানুষ বলতে চায়না বা বললেও এমন সময়ে গিয়ে বলে যখন হয়তো কিছুটা দেরী হয়ে যায়। আবার আমাদের মধ্যে এমনও ধারণা আছে যে এসব নিয়ে কথা বলা যাবেনা কারণ এতে মানুষ কষ্ট পাবে। কিন্তু এটা আসলে লুকানোর বা চুপ করে থাকার বিষয় না। ফার্টিলিটিকে সুস্থতা এবং ইনফার্টিলিটিকে ডিজিজ হিসেবে ধরা হয়। আমরা যাতে ফার্টিলিটি থেকে ইনফার্টিলিটি স্টেইজে চলে না যায় সেজন্য প্রতিরোধমূলক যা যা পদক্ষেপ নেয়া যায় তা তা করতে পারি। আর যদি সেই পর্যায়ে চলেই যাই তখন চিকিৎসা করতে পারি।

বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বে অধিক সন্তান নেয়াকে উৎসাহিত করা হয়। এবং কেউ যদি এই ধারা বজায় রাখতে চায় বা ইচ্ছা পোষণ করে এই ব্যাপারে তবে তার জন্য তার ফার্টিলিটিকে ধরে রাখার চেষ্টা করা এবং এই ব্যাপারে জ্ঞানার্জন করা কিছুটা জরুরী বটে।

এখন দেরীতে বিয়ে এবং বাচ্চা নেয়ার হার আগের তুলনায় বেড়েছে। বাংলাদেশে লেইট ম্যারেইজ খুব বেশি না হলেও এর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধির দিকেই আছে। এমেরিকার একটা রিসার্চে পাওয়া গেছে আগে যেখানে ৮ জনের মধ্যে ১ জনের ইনফার্টিলিটি পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৫ জনের মধ্যে ১ জনের পাওয়া যায়। এখন বিয়ে আগে করলেও বাচ্চা নেয়ার ক্ষেত্রে ৩০ পার করার নজির আগের তুলনায় বেশিই পাওয়া যায়। বিশেষ করে পরিবারগুলো এখন ক্যারিয়ার, পড়াশোনা, আত্মনির্ভরশীল হবার দিকে ঝুঁকছে বেশি। তারা চিন্তা করছে সন্তান আসার আগে একটা ব্যবস্থা করে নিতে বা নিজেরা একা সময় পার করতে চাচ্ছে।

এছাড়াও আমাদের সমাজে বর্তমানে স্বাস্থকর জীবন ব্যবস্থা কমই দেখা যাচ্ছে। আমাদের সবার মধ্যেই কোন না কোন রোগ বাসা বেঁধে যাচ্ছে। ছোটবেলা থেকেই প্রপার নিউট্রিশন মেইনটেইন না করার কারণে স্থুলতা, বিভিন্য স্ত্রীরোগ বাসা বাঁধছে মেয়েদের শরীরে। বর্তমানে দেখবেন ডায়বেটিস, থাইরয়েড খুব কমন কিছু রোগ। এবং পরিবেশ দূষণ তো আছেই। সব মিলে প্রভাব পরছে ফার্টিলিটি এর উপর।

ছেলেদের প্রজনন প্রক্রিয়া

একজন মহিলা তার জীবদ্দশায় কয়জন বাচ্চার জন্ম দিচ্ছে তার হার বৈশ্বিকভাবে কমছে। ২০২০ এ এটি ছিল ২.৩, ২০২১ এ তা হয়েছে ২.২৩ এবং ধারণা করা হচ্ছে ২০৫০ এ এই হার হবে ১.৬৮ আর ২১০০ তে হবে ১.৫৭। উদ্বেগজনক, তাইনা?

আমরা অনেকেই এটা ধরে নেই যে বন্ধ্যাত্ব নিয়ে যখন কথা হচ্ছে তাহলে এটা অবশ্যই মেয়েদের সমস্যা। কিন্তু না, এটা ছেলে নেয়ে উভয়ের সমস্যা বর্তমানে। মেয়েদের গর্ভধারণে অপেক্ষা করার প্রয়োজন পড়া বা অতিরিক্ত মিস্ক্যারেইজের পেছনে ছেলেদের ক্রমহ্রাসমান স্পার্ম কাউন্ট ও অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। আমাদের উল্টোপাল্টা খাদ্যাভ্যাস এবং পরিবেশ দূষণ এর ফলাফল।

একজন স্বাভাবিক পুরুষ এর শরীরে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ মিলিয়ন স্পার্ম তৈরি হয়। ১ সেকেন্ডে ১৫০০ স্পার্ম তৈরি হয়। প্রতি তিন মাসে স্পার্মের নতুন ব্যাচ আসে পুরুষের শরীরে। তো এটা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে একজন পুরুষ চাইলেই ৩ মাস ভালো খাবার খেয়ে, ভালোভাবে জীবনযাপন করে সুস্থ, ভালো মানের স্পার্মের নতুন ব্যাচ তৈরি করতে পারে।  সুস্থ, ভালো মানের স্পার্মের উপর জোড় দিচ্ছি কারণ সুস্থ, ভালো স্পার্ম একটা বাচ্চার জেনেটিক গঠন, শারীরিক গঠনের সাথে অনেকটা যুক্ত। এমনকি মিসক্যারেইজও কমানো সম্ভব এর মাধ্যমে। পুরুষ যদি সিগারেট, ভেইপ, এলকোহল সেবন জাতীয় অভ্যাস বাদ দেয় তাহলে মিসক্যারেইজ রেইট কমতে পারে। কারণ এসব বাজে অভ্যাসের ফলে পুরুষ বাজে মানের স্পার্ম তৈরি করে। একটা শিশু জন্মের পর দেখা যায় বিভিন্য অসুস্থতা লেগে থাকেই, সেটা জেনেটিক কারণেও হতে পারে।


আরও মজার তথ্য হচ্ছে সুস্থ স্পার্ম দিয়ে ডিম্বাণু ফার্টিলাইজ করতে নিয়মিত (প্রতিদিন বা প্রতি ৩/৪ দিনে) শারীরিক সম্পর্ক করা জরুরী। তবে এখানেও সেই একি কথা, বিশ্বের যত বয়স হচ্ছে ততোই দূষণ বাড়ছে। দূষিত বাতাস, খাবার, রোগ ধীরেধীরে পুরুষের স্পার্ম কাউন্ট কমিয়ে দিচ্ছে, তাকে বন্ধ্যাত্বের দিকে অগ্রসর করছে।

বিদেশে অনেকেই Testosterone Replacement Therapy নিচ্ছে। বাংলাদেশেও এই ব্যবস্থা আছে। তবে এটি বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে সঠিক না। কারণ যখন আর্টিফিশিয়ালি TRT নেয়া হচ্ছে তখন পুরুষের ব্রেইন সিগনাল পাচ্ছে যে তার শরীরে ইতিমধ্যেই টেস্টোস্টরন আছে যথেষ্ট। তাহলে আর তৈরি করার প্রয়োজন নেই। এর ফলে এটা মেইল বার্থ কন্ট্রোল এর মতো কাজ করছে।

মেয়েদের প্রজনন প্রক্রিয়া

এবার আসি মেয়েদের প্রজননে। ছেলেদের স্পার্ম ৩ মাস অন্তর অন্তর তৈরি হয়। কিন্তু মেয়েদের ডিম্বাণু একবারই তৈরি হয়। মেয়েদের শরীরে একটা ডিম্বাণু ব্যাংক থাকে। একটা মেয়ে বাচ্চা যখন মায়ের গর্ভে ৫ মাস বয়সে থাকে তখন তার শরীরে ৬-৭ মিলিয়ন ডিম্বাণু তৈরি হয়। জন্মের সময় থাকে ১-২ মিলিয়ন। পিউবার্টির সময় থাকে ৫ লাখ। যখন একটা মেয়ে বাচ্চা নেয়ার কথা ভাবছে তখন থাকছে ৩ লাখ। আর মেনোপজের সময় থাকছে ১০০০ এর ও কম ডিম্বাণু। এতো এতো ডিম্বাণুর মাঝে একজন মহিলা তার পুরো জীবনে ডিম্বস্ফোটন করে মাত্র ৪০০ থেকে ৫০০ ডিম্বাণু। প্রতি মাসেই শরীর তার ডিম্বাণু ব্যাংক থেকে খুব সামান্য কিছু ডিম্বাণু পাঠায়, এরমধ্যে একটা ডিম্বাণু অভুলেট করবে বাকি গুলো মরে যাবে।

এভাবে প্রতিমাসে চলতে থাকে। এবং যত বয়স বাড়ে ততো ডিম্বাণু ব্যাংক থেকে ডিম্বাণু বের হবার সংখ্যা কমে আসে। খাদ্যাভ্যাস, অটো-ইমিউন ডিজিজ, কিমোথেরাপি, জীবনব্যবস্থা ইত্যাদির কারণে ডিম্বাণু তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যেতে পারে।

বর্তমানে আইভিএফ খুব জনপ্রিয়। কিন্তু আইভিএফ সাক্সেস এর জন্যও ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে আসা বা স্বাস্থকর ডিম্বাণু থাকা জরুরী। ৩০ এর পর থেকেই ধরা হয় এমন সময় যে এই সময়ে ডিম্বাণুর সংখ্যা একেবারেই কমে আসছে এবং প্রতিমাসেও কম করে আসছে ডিম্বাণু ব্যাংক থেকে। ৩৭ বছরের দিকে ডিম্বাণু ব্যাংকে গড়ে ২০০০০ ডিম্বাণু থাকে। ৩৪ থেকে ৩৭ বছরের দিকে ডিম্বাণুর সংখ্যা দ্রুত কমতে থাকে। এর মধ্যে সব ডিম্বাণুই স্বাস্থ্যকর থাকেনা। সেই মায়ের গর্ভে থাকা থেকে এতো বছরে অনেক কিছুর মধ্যে দিয়ে যায় আমাদের শরীর। তার প্রভাব ডিম্বাণু ব্যাংকে থাকা ডিম্বাণুর উপরেও পরে। শেষের দিকে থাকা ডিম্বাণুগুলো তাই অস্বাভাবিক হতে পারে, এদের মধ্যে ক্রমোজোম গুলো পুরনো এবং অস্বাভাবিক হতে পারে। এই সময়ে কন্সিভ করলে মিস্ক্যারেইজ, জেনেটিক এবনর্মালিটির সম্ভাবনা থাকে বেশি। 

সুতরাং আমরা এটা বলতে পারি যে আমরা যত বেশি সময় নিব প্রেগন্যান্সিতে যাবার ততো বেশি সম্ভাবনা বাড়বে মিস্ক্যারেইজ, এবনর্মাল বাচ্চা, অসুস্থ বাচ্চা এবং কন্সিভ ই না করার।

ইন্টেরেস্টিং ফ্যাক্ট হচ্ছে Anti Mullerian Hormone (AMH) Test এর মাধ্যমে কেউ চাইলে তার ডিম্বাণু ভল্টে কত ডিম্বাণু আছে তা জানতে পারবে। এবং আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান এর মাধ্যমে ভল্টের বাইরে ওই মাসে কত ডিম্বাণু এসেছে সেটা জানতে পারবে। যারা কন্সিভের চেষ্টা করছেনা তাদের এই টেস্ট করার পরামর্শ American College of OBGYN দেয়না। তবে ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ এমেরিকান ডক্টর নেটালি ক্রফোর্ড এর মতে এই টেস্ট আগেই করার মাধ্যমে মেয়েরা বাচ্চা নিতে দেরি করার সিদ্ধান্তটা বুঝেশুনে নিতে পারে।

ওভারিয়ান রিজার্ভ লম্বা সময় ধরে রাখতে এবং ভালো মানের রাখতে, স্পার্মের মান ভালো রাখতে কি করা যায়?

  • যেকোন খারাপ খাদ্যাভ্যাস বাদ দিতে হবে।
  • পরিবেশ দূষণ কম এমন জায়গায় বসবাস করা।
  • ননস্টিক, প্লাস্টিক কন্টেইনার বাদ দেয়া।
  • অভেনে প্লাস্টিক দিয়ে গরম না করা।
  • ইনফ্লেমেশন হয় এমন সব খাবার বাদ দেয়া।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো যাতে শরীরের প্রদাহ কমানো যায়।
  • সহনীয় মাত্রায় ব্যায়াম করা।
  • রিল্যাকজেশন প্র্যাক্টিস করা।
  • প্রসেসড খাবার বাদ দেয়া
  • চিনি কমানো বা বাদ দেয়া।
  • মাছ, মাংসের মিশ্র ডায়েট রাখা সপ্তাহব্যাপী।
  • স্বাস্থকর ফ্যাট খাওয়া।
  • পূর্ণ ননিযুক্ত দুধ খাওয়া
  • মানষিক অশান্তি থেকে যতটুকু সম্ভব দূরে থাকা বা তা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা

অনেকেই বলে ডিভাইস যেমন ফোন বা ল্যাপটপের কারণেও বন্ধ্যাত্ব হচ্ছে। এটা কিছুটা সঠিক। তবে বর্তমানে যেসব ফোন বাজারে আসছে সেগুলোই র‍্যাডিয়েশনের মাত্রা অনেক কম। কিন্তু কথা হচ্ছে র‍্যাডিয়েশন আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্য মাধ্যমে পাচ্ছিই। আমরা বসবাস করছিই র‍্যাডিয়েশনের মধ্যে। সেটার একটা ইম্প্যাক্ট তো আছেই আমাদের ফার্টিলিটিতে। এমনকি অতিরিক্ত তাপ থেকেও অণ্ডকোষ প্রভাবিত হতে পারে। ল্যাপটপ কোলের উপর রেখে কাজ করা, শরীর অনেক বেশি গরম হলেও সেটা অণ্ডকোষে প্রভাব ফেলতে পারে।

সব ঠিক থাকার পরেও অনেক কাপল-ই কন্সিভ করতে পারেনা। তখন তারা বিভিন্য পদ্ধতিতে গর্ভধারণের চেষ্টা করে। কেউ কেউ সমস্যা হবার আগেই ৩০ এর আগেই তাদের এগ ফ্রিজিং করে নেয়  ভবিষ্যতের জন্য। ভবিষ্যতে সেটা ফার্টিলাইজ করে তারা গর্ভধারণ করতে পারে। কেউ কেউ IVF পদ্ধতিতে যায়। আরও অনেক পদ্ধতি উন্নত বিশ্বে প্রচলিত আছে যেগুলো ইসলাম ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী হালাল না। এই ব্যাপারে মাতৃত্ব সাইটে একটি সিরিজ লেখা আছে সন্তান লাভ, ভ্রূণবিদ্যা ও যিনাঃ ইনফার্টিলিটি ও তাক্বদীর নামে। পড়ে নিতে পারেন। এই সব পদ্ধতিই অনেক ব্যায়বহুল। অনেকের পক্ষেই হতে পারে এসব পদ্ধতি নাগালের বাইরে। আর যাদের নাগালের ভেতরে আছে তাদের মধ্যেও সবাই শেষ লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনা শেষ পর্যন্ত। সবার চেষ্টাই সফল হয়না। তবে অনেকেরই হয়। এমনি একজন মা আমাদের মাতৃত্ব প্লাটফর্মে নিজের বার্থস্টোরি যাত্রা শুনিয়েছিলেন। এখানে ক্লিক করে শুনে নিতে পারেন আপুর গল্প।

আমাদের সমাজে যখন একটা কাপল বন্ধ্যাত্ব ইস্যুর মধ্য দিয়ে যায় তারা দেখা যায় নিজেদের একেবারে আইসোলেইট করে ফেলছে। তাদের সমবয়সীরা বাচ্চা নিতে পারছে, কিন্তু তারা পারছেনা। তারা মোটামুটি একটা ডিপ্রেশন স্টেইজে চলে যায় এই সময়। এটার কারণে ট্রিটমেন্টের উপর প্রভাব পরে। কারণ মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা একে অপরের সাথে যুক্ত।

সন্তান খুবই আকাঙ্ক্ষিত এবং আল্লাহর তরফ থেকে উপহার। কেউ পান, কেউ কেউ পান না। আল্লাহ সবাইকে মানসিক শান্তি দিক সর্বাবস্থায়।

আমার অন্যান্য লেখা পড়তে পারেন এখানে

তথ্যসূত্র

১। t.ly/2eVQQ

২। t.ly/udV44

৩। t.ly/YD2tZ

৪। t.ly/0QAPI