একটি সন্তান পৃথিবীতে জন্মদানের প্রক্রিয়া চলতে থাকে লম্বা সময়ের প্রেগন্যান্সীতে, তার পরিসমাপ্তি ঘটে ডেলিভারির মাধ্যমে। প্রথমবার সন্তান ধারণ করা মায়েরা ঠিক বুঝে উঠতে পারেন না, ডেলিভারীর কোন পদ্ধতি তার জন্য ভালো হবে – নরমাল ডেলিভারী নাকি সি-সেকশন? নরমাল ডেলিভারি হলে কোনটা বেছে নেওয়া উচিত? স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রসব নাকি ওষুধ ব্যবহার সহযোগে ইন্ডিউসড প্রসব?

এক্ষেত্রে একজন ডাক্তার অবশ্যই ভালো পরামর্শ দেবেন, তবে তার আগে নিজেদের এই ব্যাপারগুলো ভালো করে জানার প্রয়োজন আছে, যেমন- কখন নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব, কোন অবস্থায় সি-সেকশনে যাওয়া প্রয়োজন, আবার কখন সবকিছু ঠিক থাকলেও শেষ মুহূর্তে ইমার্জেন্সী সি-সেকশন লাগতে পারে ইত্যাদি।   

নরমাল ডেলিভারিতে (ভ্যাজাইনাল বার্থ) যা হয়

নরমাল ডেলিভারিতে নির্দিষ্ট সময়ের পর প্রাকৃতিকভাবে ব্যাথা শুরু হতে পারে অথবা ওষুধ প্রয়োগে ইন্ডিউসড পেইন হতে পারে। এসময় জরায়ুর পেশী ক্রমাগত সঙ্কুচিত-প্রসারিত হতে থাকে, এবং বাচ্চার মাথাকে ঠেলে প্রসবদ্বার বা বার্থ ক্যানেলে পৌঁছে দেয়। এইসময় সার্ভিক্স এর মুখ আস্তে আস্তে খুলতে থাকে এবং বাচ্চার মাথা আর ঘাড় বের হওয়ার মতো অবস্থায় চলে যায়। এক পর্যায়ে যেয়ে বাচ্চা ভেতর থেকে চাপ প্রয়োগ করে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাকে পুশ করতে হয়, যা থেকে বাচ্চার মাথা দ্রুত নীচে নেমে আসে। এইসময় বাচ্চার মাথা মায়ের পেরিনিয়াল এরিয়া অর্থাৎ যোনি আর মলদ্বারের মধ্যকার জায়গাটি  প্রসারিত করে, যতক্ষণ না পর্যন্ত বাচ্চা যোনিপথ দিয়ে সম্পূর্ণ বের হয়ে আসে।  

নরমাল ডেলিভারি কি কষ্টকর? 

নরমাল হোক, আর সি-সেকশন, মানব সন্তান জন্ম দেয়ার প্রক্রিয়াটিই কষ্টকর। তবে মেয়েদের শরীর জন্মগতভাবে নরমাল ডেলিভারির জন্য তৈরি। তার মানে তার এই পরিমাণ কষ্ট সহ্য করার শক্তি আছে, যাতে সে ডেলিভারি পেইন সহ্য করে নরমাল ডেলিভারি করতে পারে। বিশেষক্ষেত্রগুলো  ছাড়া অধিকাংশ মায়েরাই নরমাল ডেলিভারির জন্যে সক্ষম হয়ে থাকেন।   

সি-সেকশনে যা হয় 

সি-সেকশন আগে থেকে পরিকল্পনা মাফিক হতে পারে অথবা অবস্থা অনুযায়ী জরুরী ভিত্তিতেও হতে পারে। সি-সেকশনে মাকে অপারেশন টেবিলে নিয়ে যাওয়া হয়। পেটের উপর থেকে পর্দা টেনে দেয়া হয়, যাতে অপারেশনের প্রক্রিয়াটি মায়ের দৃষ্টিগোচর না হয়। সার্জন মায়ের তলপেটের নীচের দিকে (পিউবিক হেয়ার শুরুর ঠিক উপরে) চার থেকে ছয় ইঞ্চি লম্বা আড়াআড়ি কেটে নেন। জরায়ু যখন বাহির থেকে দেখা যায়, আড়াআড়ি ভাবে আরেকটা ইনসেশন করেন জরায়ুর নীচের দিকে। এরপর জরায়ুর কাটা অংশটুকু দিয়ে বাচ্চাকে টেনে বের করে আনা হয়। এরপর  আমবেলিক্যাল কর্ড ও প্ল্যাসেন্টা বের করে নিয়ে আসা হয়। তারপর জরায়ু আর তলপেটের খোলা অংশটুকু আলাদা আলাদাভাবে সেলাই করে বন্ধ করে দেয়া হয়।

বর্তমানে এই প্রক্রিয়াটি আমাদের দেশে বেশ প্রচলিত নানারকম কারণে।    

সিজারিয়ান সেকশন প্রকৃতপক্ষে মা ও শিশু উভয়ের জন্যই জীবন রক্ষাকারী ও বেশ বড় ধরনের সার্জারি। এখানে এপিডুরাল  এনেসথেশিয়া প্রয়োগ করে মায়ের পেট থেকে পা পর্যন্ত সাময়িক অসাড় করে অপারেশন করা হয়, মা এখানে চেতনাবিহীন হন না। তবে মা পেটের ভেতরের চাপ বোধ করতে পারেন, অন্য অনুভূতিও হতে পারে। 

সেড়ে উঠতে কত সময় লাগে?

সাধারনত বড় ধরনের জটিলতা না থাকলে নরমাল ডেলিভারিতে সেড়ে উঠতে সময় কম লাগে সি-সেকশনের তুলনায়। নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান জন্মের পর একজন মা হুইল চেয়ারে বসেই ডেলিভারি রুম ত্যাগ করতে পারেন। এমনকি পেরিনিয়াম স্টিচ বা সেলাই থাকলেও। বাচ্চাকে সাথে সাথে কোলে নেয়া, ব্রেস্টফিডিং করানো, স্বাভাবিক হাঁটাচলা সবই সম্ভব। সি-সেকশনে যেহেতু পেট কয়েক লেয়ারে কেটে বাচ্চা বের করে আনতে হয়, বেশ কিছু স্টিচ পড়ে ভেতরে আর বাহিরে, মায়ের সেড়ে উঠতে বেশি সময় লাগে। তলপেটের কাটা অংশটি শুকানো পর্যন্ত মাকে বেশ খানিকটা কষ্ট করতে হয়। প্রথম দুই সপ্তাহ বেশ কঠিন। কারন এরকম ক্ষত নিয়ে নতুন জন্মানো শিশুটিরও দেখাশোনা করতে হয় মাকে।   

জটিলতাঃ সি- সেকশন বনাম নরমাল ডেলিভারি

নরমাল ডেলিভারির চেয়ে রক্তপাতের পরিমাণ বেশি হয় সি-সেকশনে। যে কোন সার্জারির মতো এতেও ইনফেকশন হতে পারে, রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। যেহেতু সি-সেকশনে মা সাথে সাথে উঠে বসতে বা চলাফেরা করতে পারেন না, রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা থেকেই যায়। এছাড়া সি-সেকশনে এনেস্থেশিয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, লম্বা সময় ব্যাথা হতে পারে। যেজন্য সি-সেকশন হওয়া মাকে বেশি সময় হসপিটালে থাকতে হয়। অনেকসময় ডেলিভারি পরবর্তী জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন অসহনীয় ব্যাথা, বা কাটা জায়গায় ঘা থেকে ইনফেকশন।  সার্জারির সময় বাওয়েল বা ব্লাডার ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ব্লাড ক্লট জমতে পারে। সি-সেকশন মায়েরা বাচ্চাকে সচরাচর দ্রুত বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন না। তলপেটের ক্ষততে ব্যাথা আর অস্বস্তি ভাব থাকাতে, সেড়ে ওঠার সময়টা বড় হয়। অনেকের ক্ষেত্রে মাস দুয়েক লেগে যায়। এছাড়া একবার সি-সেকশন হলে আমাদের দেশের ডাক্তাররা সহজে পরবর্তীতে নরমাল ডেলিভারি করাতে চান না।  

তবে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যদি পরবর্তী সন্তান প্রসবের সময় মায়ের নরমাল ডেলিভারি করার মত শারীরিক সুস্থতা  থাকে এবং পূর্ববর্তী প্রসবের সময়কালীন জটিলতা বর্তমান পরিস্থিতিতে না হয়, তবে নরমাল ডেলিভারি করানো সম্ভব।        

নরমাল ডেলিভারিতে সাধারনত বাচ্চার মাথা বের হয়ে আসার কথা। যদি কোন কারনে বার্থ ক্যানেলের কোথাও বাচ্চা আটকে যায়, সেক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে। অনেক সময় বাচ্চার কাঁধ মায়ের পিউবিক বোনে আটকে যেতে পারে, যাকে শোল্ডার ডিস্টশিয়া (shoulder dystocia) বলে। এরকম ক্ষেত্রে ডাক্তাররা ভ্যাকুয়াম এক্সট্রেকশন করেন। যাতে ভ্যাকুয়ামের মতো একটা টেকনিকে সাকশান কাপের সাহায্যে বাচ্চাকে টেনে বের করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে ফোরসেপের সাহায্যে ডেলিভারি করাতে হয় যা “ফোরসেপ ডেলিভারি” নামে পরিচিত।

এক্ষেত্র গুলোতে দেখা যায় যে সার্ভিক্স পুরোপুরি ডাইলুটেড হয়ে বাচ্চার মাথা দেখা যাওয়ার পরও বাচ্চা স্বাভাবিক নিয়মে  বের হয়ে আসে না, তখন বাচ্চার জীবন বাঁচাতে ও মাকে সাহায্য করতে ডাক্তার ভ্যাকুয়াম বা ফোরসেপ ডেলিভারি করে থাকেন। তবে এসব ক্ষেত্রে মায়ের পেরিনিয়াম (যোনির শেষভাগ থেকে মলদ্বারের উপর পর্যন্ত) কাটার প্রয়োজন পড়ে যা এপিসিওটমি নামে পরিচিত। বাচ্চা ডেলিভারির পর ডাক্তার তা সেলাই করে দেন। সাধারনত অল্প সময়ের মধ্যে এপিসিওটমির ক্ষত ভালো হয়ে যায়, স্বাভাবিক অবস্থায় ৪০-৪৫দিন সময় লাগতে পারে। 

নরমাল ডেলিভারিতে সম্ভব্য অন্যান্য জটিলতার মধ্যে রয়েছে পেলভিক অর্গান প্রলাপ্স, যা কিছু সংখ্যক মায়েদের হয়ে থাকে। যেহেতু লাস্ট স্টেইজে পুশ করে প্রেশার দিয়ে বাচ্চাকে বের করতে হয়, এরকম প্রলাপ্সের ঘটনা ঘটতে পারে। অনেকে ডেলিভারির পর ব্লাডারের উপর সাময়িক নিয়ন্ত্রণ হারান। তবে সি-সেকশনের ক্ষেত্রেও এটি ঘটতে পারে।  

গবেষণায় আরও জানা গেছে, সিজারিয়ান ডেলিভারিতে প্রসব-পরবর্তী বিষণ্নতার প্রকোপ বেশি দেখা যায়।

বাচ্চার জন্য কোনটি ভালো? নরমাল ডেলিভারি, নাকি সি-সেকশন?  

কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে সি-সেকশনে জন্ম নেয়া বাচ্চাদের ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কিছুটা কম থাকে নরমাল ডেলিভারিতে জন্ম নেয়া  বাচ্চাদের তুলনায়, তবে সেটি কিছু দিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়। আবার এই শিশুদের পরবর্তীতে এলার্জি ও শ্বাসকষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিজ্ঞানীরা ভাবছেন এর পেছনে মাইক্রোবের প্রভাব থাকতে পারে। নরমাল ডেলিভারিতে বাচ্চারা মায়েদের বার্থ ক্যানেল থেকে এটি পেয়ে থাকে। মাইক্রোব হচ্ছে শরীরের উপকারী জীবাণু, স্বাভাবিক অবস্থায় এই জীবাণু গুলো একটি সুস্থ শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করতে সাহায্য করে।

এছাড়া ভ্যাজাইনাল ডেলিভারিতে সাধারনত বাচ্চার জন্মের সাথে সাথেই স্কিন-টু-স্কিনের (মায়ের বুকের উপর দিয়ে দেয়া হয়, যাতে বাচ্চা মায়ের ত্বকের সংস্পর্শে আসতে পারে) জন্য মাকে দেয়া হয়। এভাবেও বাচ্চা মায়ের ত্বক থেকে মাইক্রোব পেয়ে থাকে।    

নরমাল ডেলিভারিতে সাথে সাথেই মা বাচ্চাকে ব্রেস্টফিড করাতে পারেন। যদিও দুধের পর্যাপ্ত ফ্লো আসতে দুই/তিনদিন সময় লাগতে পারে। কিন্তু মায়ের পক্ষে সম্ভব বসে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানো। সি-সেকশন করা অনেক মায়েরাই অভিযোগ করেন, ব্রেষ্টমিলক সহজে আসে না। তবে শাল দুধ এক দুই ফোঁটা যাই আসুক, সেটা সেই মায়ের বাচ্চার জন্য যথেষ্ট ।  নানা পজিশন ও পরিকল্পিত পরিচালনা  আছে, যার সাহায্য নিয়ে একজন সিজারিয়ান মা’ও তার সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারেন। মায়ের দুধের শুরুতে যে শালদুধ আসে, তা ইমিউন সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য খুবই উপকারী। 

ডেলিভারির জন্য আপনি কোন প্রক্রিয়াটি বেছে নেবেন? 

মেয়েদের শরীর প্রকৃতিগতভাবে ভ্যাজাইনাল ডেলিভারির জন্য তৈরি। যদি কোন ধরনের জটিলতা না থেকে থাকে, তবে অবশ্যই মায়েদের নরমাল ডেলিভারির চিন্তা করা উচিত। নরমাল ডেলিভারিতে সেড়ে ওঠা যায় দ্রুত, আপনি সহজেই প্রাত্যহিক জীবনে ফিরে আসতে পারবেন, বাচ্চার দেখাশুনা করতে পারবেন। আমাদের দেশে অনেক মায়েরাই কোন জটিলতা ছাড়াই ইলেক্টিভ (স্বেচ্ছায়) সি-সেকশনে যান, যেটি একদমই ঠিক নয়। অনেকে ডেলিভারি পেইনের কথা চিন্তা করে নরমাল ডেলিভারি এড়াতে চান। ব্যাথাহীন ডেলিভারি সম্ভব নয়, এটা ঠিক, কিন্তু বেশ কিছু পেইন ম্যানেজমেন্টের পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে ডেলিভারি পেইন সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব।  

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে সি-সেকশনের দরকার পরে। যেমন বাচ্চার মাথা যদি শেষ পর্যন্ত নীচের দিকে না নামে। ভ্যাজাইনাল ব্রিচ ডেলিভারি ঝুঁকিপূর্ন। টুইন বেবি বা তার চেয়ে বাচ্চার সংখ্যা বেশি হলে অনেকে সি-সেকশন পছন্দ করেন। ডাইএমনিওটিক টুইন (যাদের প্রত্যেকের প্ল্যাসেন্টা ও এমনিওটিক স্যাক আলাদা থাকে) নরমাল ডেলেভারীতে সম্ভব। মনোএমনিউটিক টুইনদের (একটাই এমনিওটিক স্যাক) জন্য সি-সেকশন ভালো অপশন, কারন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এরা মায়ের পেটে একজন আরেকজনের সাথে জড়িয়ে থাকে। 

সি-সেকশনের পর পরবর্তীতে ভ্যাজাইনাল ডেলিভারির সম্ভাবনা

একসময় যেমন মনে করা হতো, একবার সি-সেকশন মানেই পরবর্তীতে যতবার বাচ্চা হবে, প্রতিবারই সি-সেকশন করতে হবে এই ধারনা এখন আর প্রযোজ্য নয়। এখন ভি-ব্যাক (একবার সি-সেকশনের পর পরবর্তীতে ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি) সম্ভব। সাধারনত সি-সেকশনে তলপেটে আড়াআড়ি ভাবে কাটা হয়, যেখানে খুব একটা ইউটেরাইন মাসল থাকে না। তাই একবার সি-সেকশনের পর পরবর্তী প্রেগন্যান্সিতে নরমাল ডেলিভারির জন্য চেষ্টা করলে ইনসেশন র‍্যাপচার (আগের সেলাই খুলে যাওয়া) এর সম্ভাবনা কম থাকে। তবে প্রথম সি-সেকশনের কাট যদি লম্বালম্বি হয়, সেক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। ভি-ব্যাকের ক্ষেত্রে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেমন ইউটেরাইন র‍্যাপচারের কথা মাথায় রাখা উচিত। যেকোন সময় এতে প্রচুর রক্তপাত ঘটতে পারে। মায়ের জীবন শঙ্কায় পড়তে পারে। তাই ভি-ব্যাক বাসায় করানোর চেষ্টা না করাই উচিত। শুরু থেকেই হসপিটালের দ্বারস্থ হওয়া দরকার।         

কোন জটিলতা যদি না থেকে থাকে, ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন যে আপনি নরমাল ডেলিভারির ব্যাপারে আগ্রহী। এমন ডাক্তার খুঁজে বের করতে পারেন, যারা নরমাল ডেলিভারি করান, প্রয়োজন ছাড়া সি-সেকশনে যান না। ডাক্তার যদি সি-সেকশন করতে হবে এমন জানানও, তাহলে প্রশ্ন করে বিস্তারিত জেনে নিন যে উনি কি কারনে সি-সেকশন করতে চাইছেন, এটি এড়ানোর কোন উপায় আছে কিনা। অনেক সময় জানার অনেক ঘাটতির কারনে নতুন মায়েরা বুঝতে পারেন না, কী করবেন। সেক্ষেত্রে সবকিছুর সুবিধা, অসুবিধা ভালো মতো জেনে নিন। জানা থাকলে আপনার সিদ্ধান্ত নেয়া অনেকটাই সহজ হবে। 

একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন, আপনি ডেলিভারির জন্য যে প্রক্রিয়াতেই যান না কেন, দিন শেষে বাচ্চাটি সুস্থ অবস্থায় পৃথিবীতে আসতে পারছে কিনা, এবং আপনি সুস্থ আছেন কিনা, এগুলোই গুরুত্বপূর্ন। কাজেই যারা শুরু থেকে নরমাল ডেলিভারি করাতে চেয়েছেন, কিংবা সমস্ত প্রস্তুতি থাকার পরও সি-সেকশনে যেতে হয়েছে, এমন মায়েরা মন খারাপ করবেন না। দিনশেষে আপনার সুস্থতা ও আপনার সুস্থ সন্তানের সুন্দর হাসিই সকলের একমাত্র কাম্য- সে আপনি সিজারিয়ান মা’ই হন, বা সন্তান নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে জন্ম দেন। 

আপনি এখন একজন মা হয়েছেন, এবং আপনার কোলে আপনার সুস্থ সন্তান আছে- এর চাইতে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে!       

লেখাটি রিভিউ করেছেন –

ডাঃ সারওয়াত জাবীন আনিকা
এমবিবিএস
KMC (IMCS) – এ বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত

ছবি কৃতজ্ঞতা TedMedTourism, iFeed Project Infant Feeding, The Conversation