শিশুকে শাসন করছেন নাকি শারীরিক / মানসিক নির্যাতন?

শিশুকে শাসন করছেন নাকি শারীরিক / মানসিক নির্যাতন?

বাবা মায়েরা সাধারণত বাচ্চাকে এমনভাবে মারেন না যাতে বাচ্চার শারীরিক বিশেষ কোন ক্ষতি হয়ে যায়। তাহলে শারীরিক নির্যাতনকে নিষেধ করা হয় কেন ? করা হয় কারন এর মানসিক নির্যাতনের যে অংশটুকু থাকে তার জন্য।

শারীরিক নির্যাতন করলে বাচ্চা দুইভাবে কষ্ট পায়, এক হচ্ছে শারীরিক, এবং আরেক হচ্ছে মানসিক। শারীরিক অংশটুকু দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি না করলেও মানসিক অংশটুকু দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি করে ফেলে। এতে মনের উপর যে চাপ পড়ে তা মস্তিষ্কের ক্ষতি করে ফেলে , এইকথা শিশুদের মস্তিষ্ক বিশেষজ্ঞ(Child Neurologist)রা অসংখ্যবার বলেছেন।

যেকোন মানুষের উপর মানসিক নির্যাতনের ক্ষতিগুলো শারীরিক নির্যাতনের থেকে বেশি হয় এবং এই ক্ষতি অপূরণীয়। অযাচিত আচরণ, অনৈতিক আচরণ, হঠাৎ করে ভয়ংকর শাস্তি দিয়ে ফেলা, অসামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণ, এগুলো তাদের চারিত্রিক ক্ষতি যেমন করে, তেমনিমস্তিষ্কের ক্ষতিও করে

অযাচিত আচরণ

বাচ্চাকে এমন কিছুর জন্য ভর্ৎসনা করছেন, এমন কিছু তার কাছ থেকে আশা করছেন যা তার বয়সের জন্য উপযোগী নয়। যেমন বাচ্চাকে চকলেট খাওয়ানোর কথা দিয়ে হঠাৎ মন বদলে ফেললেন। চকলেট খাওয়ানোর কথা দিয়ে বাইরে নিয়ে গেলেন। যাওয়ার পথে পার্কে খেলাধুলা করলেন। তারপর দেখলেন আপনার টায়ার্ড লাগছে, আর ভাল লাগছে না। তখন চকলেট এর দোকানে না গিয়ে বাসায় চলে আসলেন। এভাবে বাচ্চার মন ভেঙে যাবে।

আপনি আপনার সামান্য ক্লান্তি বা মুড বদলে যাওয়াকে মানিয়ে(compromise) করতে পারছেন না। উল্টো বাচ্চার কাছ থেকে আশা করছেন সে যেন কম্প্রোমাইজ করে । আপনি তাকে দোষারোপ করছেন, এত বেশি দুষ্টু কেন তুমি? এতক্ষন খেলাধুলা করলে, এখন আবার চকলেট কেন? চাইলেই সব কিছু সবসময় পাওয়া যায় না, নিজের ইচ্ছাকে হজম করতে হয়। এই ধরনের বড়দের বুলি তাকে বুঝাচ্ছেন। কিন্তু বাচ্চা যে দীর্ঘদিন চকলেট এর কথা বলেই যাচ্ছে বা আপনি যে তার মনে একটা আশা তৈরী করে ফেলেছেন, এখন হঠাৎ করে যে তার এটা হজম করার মত বয়স হয়নি এটা আপনি বুঝার চেষ্টা করছেন না। এখানে আপনি একজন বাচ্চার চেয়েও বেশি শিশুসুলভ আচরণ করছেন।

যেহেতু তার হঠাৎ করে এই ধরনের বিষয় হজম করে ফেলার মত বয়স হয়নি সেহেতু বিষয়টা তার মধ্যে কষ্ট তৈরী করবে। আমরা অনেক বড়োবড়ো ব্যাপারে যেভাবে কষ্ট পাই সে এই ছোট ব্যাপারটাতে সেরকম কষ্ট পাবে। তার কাছে তখন সেই জিনিসটাই সবচেয়ে কাম্য। এবং এটা না পেয়ে তার মন ভেঙে যাবে। যেমন আপনি খুব মনে প্রাণে চেয়েছিলেন অমুক জায়গাটাতে আপনার বিয়ে হোক। কিন্তু হল না। চিন্তা করে দেখেন আপনার মনটা কিভাবে ভেঙে যাবে ! বাচ্চাদের চাওয়া পাওয়া গুলোও এরকম।

অনৈতিক আচরণ

বাচ্চাকে চকলেট এর কথা বলেও তাকে সেটা না দেয়া, এটা ওয়াদার বরখেলাপ। আর হাদিস অনুযায়ী এটা মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য। যা আপনি নিজেই সন্তানকে শিখাচ্ছেন। ভবিষ্যতে সে নিজেও এরকম আচরণ করবে।

অথবা তাকে বলছেন অমুক খানে এই জিনিসটা আছে। লোভ দেখিয়ে নিয়ে গেলেন সেখানে। তারপর সে গিয়ে দেখল সেখানে সেটা নেই। তার মন ভেঙে দিলেন সেই সাথে মিথ্যা বলা শিখালেন। কিভাবে ধোঁকা দিতে হয় সেটা শিখালেন।

দাবিয়ে রাখা

বাচ্চা দীর্ঘদিন থেকে আপনার কাছে কোন আবদার করে যাচ্ছে, সে মনের অনেক গভীর থেকে চায় একটা বিষয়, আপনাকে নানাভাবে অনুনয় বিনয় করে, বারবার রিকোয়েস্ট করে, আপনি চাইলেই তার এই ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারেন, সবসময় না পারলেও মাঝে মাঝে চাইলেই তার ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারেন। সামান্য একটা কাজ করে তার মনে অনেক ভাললাগা তৈরী করতে পারেন, সখ পূরণ করতে পারেন। কিন্তু আপনি তা করছেন না। আপনি ভাবছেন এটা এমন কি জিনিস যার জন্য কারো মনে ইচ্ছা জাগতে পারে ?!

কিন্তু এটা আপনার মনের কথা। আপনার বাচ্চার মনের কথা ভিন্ন। তার কাছে যেকোন ভাবেই হোক বিষয়টা ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে। তার মনে কৌতূহল জেগে গেছে। এবং দীর্ঘদিন আবদার করে করে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে তার মনে আগ্রহ টা বা কষ্টটা আরো গাঢ় হয়ে গেছে। তার মনে একটা দাবিয়ে রাখা অনুভূতি হচ্ছে। তার মনে হচ্ছে তাকে কেউ কঠিনভাবে দাবিয়ে রাখছে। এত সামান্য একটা বিষয় ও সে পাচ্ছে না। এতবার বলেও তার ইচ্ছাটা সে পূরণ করতে পারছে না। তার কাছে নিজেকে খাঁচার পাখির মত মনে হবে। অস্থিরতা বেড়ে যাবে। ফলশ্রুতিতে সে চিৎকার করা , খিটখিটে হয়ে যাওয়া , কথা না শোনা এই ধরনের স্বভাবের হয়ে যাবে।

যেমন অনেক সময় বাচ্চারা বাবা মা এর সাথে অফিসে যেতে খুব বায়না ধরে। রোজ রোজ বাবা/মা কোন জায়গাটাতে যায়. সেখানে কি করে, সেই জায়গাটার প্রতি বাচ্চার মনে বিশেষ কৌতূহল তৈরী হয়। বাচ্চার মনেও আগ্রহ তৈরী হয় সেই জায়গাটায় গিয়ে সেই কাজগুলো একটু করে দেখতে যে কেমন লাগে। বাবা মা যা করে বাচ্চার মনে তা করার আগ্রহ তৈরী হওয়াটা চিরাচরিত। স্বাভাবিক। কিন্তু তারা দেখে রোজ রোজ তাদেরকে ফেলে রেখে বাবা/মা চলে যাচ্ছে। এবং এত অনুরোধের এর পরেও নিয়ে যায়না। একটু মাঝে মাঝে নিয়ে গেলে কি হয় ? অল্প সময়ের জন্যই নাহয় নিলেন। বাচ্চাকে দেখান আপনি রোজ রোজ কোথায় যান, কি কি করেন।

বাচ্চার অনুভূতিকে মূল্য দিলে বাচ্চাও আপনার অনুভূতিকে মূল্য দিবে। আপনার কথা শুনবে। আর আপনি বাচ্চার অনুভূতিকে ছুঁড়ে ফেলে দিবেন, বাচ্চাও আপনার কথাকে ছুঁড়ে ফেলে দিবে। সমানে বাঁদরামি করবে এবং দুনিয়ার সব উদ্ভট আচরণ করবে।আপনি বাচ্চার সাথে cruel আচরণ করবেন, বাচ্চাও আপনার সমস্যার সময়ে আপনাকে বুঝার চেষ্টা করবে না।

ঘরে বন্দি করে রাখা

ঘরে বন্দি করে রাখার কারণে বাচ্চার ব্রেইনের বিকাশ খুব ভালভাবেই বাধাগ্রস্ত হবে। যেকোন মানুষেরই বাসার বাইরে যেতে ভাল লাগে। বাচ্চাদের তো আরো বেশি লাগে। আমরা বড়রা মাথায় অনেক চিন্তা নিয়ে ঘুরি । তাই আমাদের অনেকদিন বাইরে না গেলেও সমস্যা হয় না। কিন্তু বাচ্চাদের জগৎ ছোট। তাদের ব্রেইন খাটানোর মত খুব বেশি কোন টপিক নেই।

তাছাড়া বাইরের জগৎটা আমরা অনেক দেখে দেখে অভ্যস্ত। তাই সারাদিন চার দেয়ালে থাকলেও আমাদের কল্পনার জগৎ অনেক জায়গাতেই ঘুরে বেড়ায় , গুরুত্বপুর্ণ চিন্তাগুলোর সাথে সাথে। কিন্তু বাচ্চাদের বাইরের জগৎ দেখার পরিমান খুবই কম। তাদের কাছে ঘরের চার দেয়াল আরো বেশি বন্দীশালার মত মনে হয় আমাদের তুলনায়। তাদেরকে প্রতিদিন অন্তত একবার বাইরে না নিয়ে গেলে তাদের দিনটা অত ভাল যায়না। বিকালের দিকে সব বাচ্চারাই চায় একটু খেলতে যেতে। একটু বাসার বাইরে যেতে। কখনো মন চায় একটু অন্য্ কোথাও যেতে। বাসা থেকে দূরে।

এতে তাদের ব্রেইনের যে পরিমান বিকাশ হবে , বাসায় বন্দি করে রেখে সেই পরিমান বিকাশ হবে না।

তাই আপনি যদি চান আপনার বাচ্চা মানসিক ও শারীরিক ভাবে সঠিক পরিমানে বিকশিত হোক, তাহলে আপনার উচিত বাচ্চাকে নিয়মিত বাইরে নিয়ে যাওয়া, এবং অন্য্ বাচ্চাদের সাথে খেলার ব্যবস্থা করে দেওয়া।

এটা তাদের অধিকার। আমাদের সবারই একটা বন্ধু-বান্ধব থাকে। যেকোন জায়গায় যাবার স্বাধীনতা থাকে। আমরা আমাদের নিজেদের জন্য সবকিছুই করছি। যখন যা মন চাচ্ছে। কিন্তু বাচ্চারা আমাদের উপর নির্ভরশীল। আমরা যদি তাদের এই চাহিদাগুলো পূরণ না করি তাহলে তারা অনেক ভাল কিছু থেকে বঞ্চিত হবে।

বাচ্চাদেরকে ঘরে আটকে রাখা খুবই অনুচিত। এটা অন্যায়। এর জন্যও আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

অসামজস্যপূর্ণ আচরণ

বাচ্চাকে অনেক আদর করছেন। তারপর হঠাৎ কোন ভুলের জন্য কঠিন মার লাগিয়ে দিলেন।

যেমন বাচ্চার সাথে শুয়ে শুয়ে গল্প করছেন। বাচ্চা অনেক হাসিখুশি মুড এ আছে। আপনিও গল্প করছেন। বাচ্চাও মজা পাচ্ছে। গড়াগড়ি করতে করতে বাচ্চার পা টা আপনার মাথার কাছে চলে এসেছে। আপনি দেখেছেন। জানেন বাচ্চার হুটহাট পা ছোঁড়ার অভ্যাস আছে। কিন্তু আপনি তাকে সাবধান করলেন না। বা তার পা গুলোকে জায়গামত সরিয়ে দিলেন না। আপনি আপনার মত গল্প করে যাচ্ছেন। হঠাৎ বাচ্চা পা ছুঁড়তেই তা আপনার মাথার সেনসিটিভ জায়গায় গিয়ে লাগল, চশমায় লেগে চশমা ভেঙে গেল বা আপনার ঠোঁটে লেগে ঠোঁট কেটে গেল। বা নাকে লেগে জোরে ব্যাথা পেয়ে গেলেন।

সাথে সাথে আপনি অগ্নিমূর্তি হয়ে তাকে ঠাস ঠাস করে কয়েকটা লাগিয়ে দিলেন। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি পুরোপুরি বিপরীত করে ফেললেন। অথচ এরকম ঘটনা আগেও ঘটেছে। আপনি জানেন আপনার বাচ্চা এরকম করে। কিন্তু যখন পা আপনার মাথার কাছে বা বুকের কাছে, এনেছে তখনও আপনি কিছুই বললেন না। পা গুলো সরিয়ে দিলেন না। তাকে কোনভাবে সাবধান করলেন না। আর যেই মাত্র পা ছুঁড়ল, আপনি ব্যাথা পেয়ে গেলেন, সাথে সাথে cruel হয়ে মারতে লাগলেন, কোন বাছবিচার না করে।

এধরনের হঠাৎ রিএকশনে তারা অনেক ভড়কে যাবে। তাদের মনে গভীর ক্ষত তৈরী হবে। আপনার প্রতি তার সম্মানবোধ কমে যাবে। আপনার কথা আর শুনতে চাইবে না। সবচেয়ে বড় কথা তাদের ব্রেইনে একটা তাৎক্ষণিক ক্ষতি হয়ে যাবে। ভবিষ্যতেও এই স্মৃতিগুলো তাকে সবসময় কষ্ট দিবে।

বাচ্চার সাথে রাগ দেখানোর বা তার কাজটা যে আপনি অনেক অপছন্দ করেছেন সেটা বুঝানোর আরো অনেক পথ আছে।

  • রাগ করে তার কাছ থেকে উঠে অন্য্ কাজে চলে যেতে পারেন , তার সাথে খেলা বা গল্প করা বন্ধ করে
  • আপনি রাগ করে বাথরুম এ বা অন্য্ কোন রুম এ গিয়ে দরজা বন্ধ করে বসে থাকতে পারেন, যদি আরেকটু বেশি রাগ দেখাতে চান। যা কিছুই করবেন নিজে নিয়ন্ত্রনে থাকবেন, বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে গেলে লাভের তুলনায় ক্ষতি বেশি হবে।

বাচ্চার সাথে আমাদের ইমোশন কেন নিয়ন্ত্রনের এর বাইরে যাবে ? তারা কি বুঝে যে কি করছে ? বুঝলে তো আর করত না। তারা এমনই। তারা অনেক জ্বালাবে এটাই স্বাভাবিক।

আমরা সবাই এরকম করেছি ছোট থাকতে। তাদের বয়স অনুযায়ী তাদের সাথে যদি আমরা ধৈর্য্য ধরতে না পারি তাহলে তারাও আমাদের যেকোন সমস্যার সময়ে বা বৃদ্ধ বয়সে ধৈর্য্য ধরতে পারবে না।

বৃদ্ধদের দেখাশোনা করা অনেক ধৈর্য্যের ব্যাপার। তখন তারা এভাবেই আমাদের সাথে রাগ দেখাবে। যখন আপনি বিছানায় প্রাকৃতিক কাজ করে ফেলবেন, আপনার শারিরীক নিয়ন্ত্রন কমে যাওয়ার কারণে টয়লেটে যাওয়ার আগেই কাপড় ভিজিয়ে ফেলবে, দাম দিয়ে ঔষধ কিনে আনার পরও খেতে ভুলে যাবেন, নিজের ভুলে অসুখ বাড়িয়ে আবার হসপিটালে ভর্তি হবেন, পকেট থেকে টাকা হারিয়ে ফেলবেন , ভুল করে এখানে সেখানে অযাচিত কথা বলে ফেলবেন, রাত বিরাতে ব্যাথা যন্ত্রনায় তাদেরকে ডাকবেন …………… ।

সবশেষে একটা গল্প বলে শেষ করি।

একবার খবরে দেখেছিলাম এক মা এক্সিডেন্ট করেছে তার ৩ বছরের বাচ্চা সহ। বাচ্চার কিছু হয়নি। মায়ের অবস্থা খারাপ। হসপিটালের বেডে পড়ে আছে দীর্ঘদিন। আর কেউ নেই দেখাশোনার। ওই বাচ্চাই মাকে মুখে তুলে খাবার খাইয়ে দেয় (হসপিটাল থেকে দেওয়া খাবার ), কমলা ছিলে মুখে তুলে দেয় , বালতিতে করে পানি এনে হাত ধুয়ে দেয়। মা কাঁদলে চোখের পানি মুছে দেয়। নিজের খাবার নিজেই খায়। নিজের জামা নিজেই পরে।

এই মা যা অর্জন করেছে আমরা কয়জন পারছি বাচ্চাকে এমনভাবে গড়ে তুলতে ? বাবা, মা – সবাইকে ভেবে দেখার অনুরোধ করছি।

এই বাচ্চার মধ্যে যে মানবিকতাবোধ গড়ে উঠেছে তা তার অভিভাবকেরই শেখানো। আর এই বাচ্চার অভিভাবক ছিলেন একা একজন মা। বাচ্চারা কিন্তু শুরুতে থাকে ফেরেস্তার মত। তারা যেমনটা দেখবে তেমনটাই শিখবে। আপনি বাচ্চাকে যত স্নেহ করবেন সেও আপনাকে ততই স্নেহ করবে। আর যত তার মন ভেঙে দিবেন, সেও আপনাকে তত বেশি অগ্রাহ্য করবে।

লেখাটি কি আপনার উপকারে এসেছে?
হ্যানা